রবিবার, ২৪শে নভেম্বর ২০২৪, ১০ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | ই-পেপার
ব্রেকিং নিউজ:
  • সারাদেশে জেলা ও উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আগ্রহী হলে আপনার সিভি ই-মেইল করতে পারেন। ই-মেইল daajkaal@gmail.com
সংবাদ শিরোনাম:
  • আবারও যাত্রাবাড়ী মোড় অবরোধ ব্যাটারি রিকশাচালকদের
  • অক্টোবরে সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৭৫ জন নিহত
  • বোয়ালখালীতে আগুনে ৫ বসতঘর পুড়ে ছাই
  • ঢাকায় আসছেন যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমবিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি কেলি রদ্রিগেজ
  • প্রথমবার সচিবালয়ে যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা
  • এস আলমের ঋণ জালিয়াতি, কেন্দ্রিয় ব্যাংকের ১৩ জনকে তলব
  • সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা
  • ড. ইউনূসের ভিশনের দিকে তাকিয়ে যুক্তরাজ্য: ক্যাথরিন ওয়েস্ট
  • ২০২৫ সালে সরকারি নির্মাণে পোড়া ইট ব্যবহার বন্ধ হবে
  • নাম ও পোশাক বদলাচ্ছে র‌্যাব

ভালো কাজ করলেই খাবার মেলে যে হোটেলে

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত:
১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৩:১৮

সারাদিনে একটি মাত্র ভালো কাজ করলেই প্রতিদিন রাজধানীর ৫ জায়গায় মিলছে দুপুরের খাবার। মানুষকে ভালো কাজে উৎসাহ জোগাতে রাজধানীর একদল তরুণের এই উদ্যোগ।

নাম দিয়েছেন ‘ভালো কাজের হোটেল’।
এতদিন শুধু খাবার মিললেও এখন তার পাশাপাশি যুক্ত করেছেন বিনামূল্যের চিকিৎসা সেবা।

২০০৯ থেকে ৭ বন্ধু মিলে শুরু করেছিলেন আর ২০১৯ সাল থেকে প্রতিদিন খাওয়ানো শুরু করেছেন, ভালো কাজের খারারের পাশাপাশি তারা শিশুদের চিকিৎসা সেবা দিয়ে থাকেন। এই পর্যন্ত তিন'শ এর বেশি অসহায় বাচ্চাদের পরিপূর্ণ চিকিৎসা সেবা দিয়েছেন। এর মধ্যে ১৫ থেকে ২০জন কে হার্টের চিকিৎসাও দিয়েছেন।

রাজধানীতে প্রতিদিন পাঁচ জায়গায় ভালো কাজের বিনিময়ে খাবার দিচ্ছেন তারা। কাওরান বাজার, সাত রাস্তা মোড়, বনানী কড়াইল বস্তি, বাসাবো ও কমলাপুর। সব মিলে ১২ থেকে ১৩ শত লোকের খাবার দিয়ে থাকেন।

বেলা বারোটার পর থেকে এই পাঁচ জায়গায় আসতে শুরু করে ভালো কাজের খাবার খেতে আসা মানুষগুলো, দেড়টা থেকে দুটোর মধ্যেই এই ভালো কাজের খাবারের পিকআপভ্যানটি চলে আসে খাবার নিয়ে, তারপর প্রত্যেকের নাম রেজিস্ট্রেশন করা হয় এবং কে কি ভালো কাজ করেছে সেটাও লিখে রাখা হয়, পরে তাদেরকে খাবার দেওয়া হয়।

ভালো কাজের হোটেলের প্রধান উদ্যোক্তা মোহাম্মদ আরিফুর ইসলাম বলেন, আমরা মানুষকে পেট ভরানোর জন্য খাবার খাওয়াই এটা কিন্তু ঠিক না, আমাদের উদ্দেশ্য দুইটা আমরা কিছু ভাল কাজ করছি, আর তাদেরকে ভালো কাজ করার উদ্বুদ্ধ করছি, তারা সবাই ভালো কাজে উদ্বুদ্ধ হবে এই আমাদের মূল উদ্দেশ্য বা ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা।

আমাদের একটি স্কুল আছে স্কুলের নাম ডেলি টেন স্কুল এখানে ৬৬৫ জন দরিদ্র অসহায় বাচ্চাকে বিনা মূল্যে আমরা পড়ালেখা করার সুযোগ দিয়েছি।

বর্তমানে আমাদের সদস্য সংখ্যা ২৫০০ এর বেশি, প্রত্যেক সদস্য প্রতিদিন দশ টাকা করে রাখে, মাসে ৩০০ টাকা হয় সেই টাকা একত্রিত করে আমাদের এই সবকিছুর পিছে ব্যয় করতে হয়, এর পাশাপাশি আমাদের কিছু শুভাকাঙ্ক্ষী আছে দেশে এবং বিদেশে। তারা আমাদেরকে অনেকভাবে সহযোগিতা করে আর এভাবেই আমাদের এই কার্যক্রমটা চলছে।

তিনি আরো বলেন আমাদের মূল উদ্দেশ্য আমরা তাদেরকে ভালো কাজে উদ্বুদ্ধ করব কারণ অনেক সময় দেখা যায়, পেটে ক্ষুধা থাকলে অসহায় মানুষগুলো অনেক ধরনের খারাপ কাজের সঙ্গে লিপ্ত হয়। এই সমস্ত অসহায় মানুষদের এক বেলা পেট ভরে খাবার দিলে তারা খারাপ কাজ থেকে দূরে থাকে।

আমরা এমন স্বপ্ন দেখি না যে হাজার হাজার মানুষকে খাওয়াবো, স্বপ্ন দেখি আমাদের সমাজে অনেক মানুষ ভালো কাজ করবে এবং খারাপ কাজ থেকে দূরে থাকবে এটাই আমাদের ভবিষ্যৎ স্বপ্ন।

এই সব উদ্যোগের পাশাপাশি বাড্ডা তে আমাদের একটি বৃদ্ধাশ্রমও আছে, সেখানে পুরুষ মহিলা ও বাচ্চা মিলে মোট ৩০ থেকে ৩৫ জন অসহায় মানুষকে আমরা ফ্রি থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করছি। তাদের জন্য আলাদা রান্না খাওয়ার ব্যবস্থা হয়। বৃদ্ধাশ্রমে যে খরচটি হয় এই খরচটি আমাদের যারা শুভাকাঙ্ক্ষী আছে তারাই মূলত বহন করে থাকেন।

এর পাশাপাশি সপ্তাহে এক দিন চলছে আমাদের ভালো কাজের হাসপাতাল, এখানে যারা চিকিৎসা নেয় তাদেরকে বলে দেয়া হয় আপনি সুস্থ হওয়ার পর একটা ভালো কাজ করবেন। খুব তাড়াতাড়ি আমরা সপ্তাহে সাত দিনই এই ভালো কাজের হাসপাতালে চিকিৎসা কার্যক্রমটি রাস্তায় ভ্রাম্যমান অবস্থায় শুরু করব ইনশাআল্লাহ।

যদি কোন জটিল বা কঠিন রোগী পাই তবে আমরা তাৎক্ষণিক তাকে মেডিকেলে ভর্তি করি এবং তার সার্বিক চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টা করে থাকি। আমাদের সদস্যদের মধ্যে যে সমস্ত ডাক্তার আছে তারাই মূলত চিকিৎসা দিয়ে থাকেন।

ভালো কাজের হোটেলে খেতে এসেছেন আসা মো: হাসান মিয়া (৫০)। আজ কি ভাল কাজ করেছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি একজন অন্ধ ব্যক্তিকে আজ রাস্তা পার করে দিয়েছি কাওরন বাজার এলাকায়, তারপর এখানে খাবার জন্য আসছি। এখানে খাবারের মান কেমন এবং কি খেতেদেয় এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন- খাবারের মান অনেক ভালো। সপ্তাহে একদিন বা দুইদিন গোস্ত ও মাছ। অন্য ৫ দিন খিচুড়ি ডিম ও সবজি।


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর