রবিবার, ২৪শে নভেম্বর ২০২৪, ১০ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | ই-পেপার
ব্রেকিং নিউজ:
  • সারাদেশে জেলা ও উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আগ্রহী হলে আপনার সিভি ই-মেইল করতে পারেন। ই-মেইল daajkaal@gmail.com
সংবাদ শিরোনাম:
  • অক্টোবরে সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৭৫ জন নিহত
  • বোয়ালখালীতে আগুনে ৫ বসতঘর পুড়ে ছাই
  • ঢাকায় আসছেন যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমবিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি কেলি রদ্রিগেজ
  • প্রথমবার সচিবালয়ে যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা
  • এস আলমের ঋণ জালিয়াতি, কেন্দ্রিয় ব্যাংকের ১৩ জনকে তলব
  • সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা
  • ড. ইউনূসের ভিশনের দিকে তাকিয়ে যুক্তরাজ্য: ক্যাথরিন ওয়েস্ট
  • ২০২৫ সালে সরকারি নির্মাণে পোড়া ইট ব্যবহার বন্ধ হবে
  • নাম ও পোশাক বদলাচ্ছে র‌্যাব
  • গণহত্যা মামলায় ৮ পুলিশ কর্মকর্তাকে গ্রেফতারের নির্দেশ

রেলমন্ত্রী

রেল যোগাযোগে দক্ষিণাঞ্চলে যুগান্তকারী পরিবর্তন আসবে

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত:
৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:২৬

পরীক্ষামূলকভাবে দেশের সবচেয়ে বড় মেগা প্রকল্প পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে শুরু হচ্ছে রেল যোগাযোগ। এ রেল যোগাযোগ দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের জন্য যুগান্তকারী পরিবর্তন নিয়ে আসবে বলে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন।

বৃহস্পতিবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় রাজধানীর কমলাপুরে ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনে পরীক্ষামূলক ট্রেনে ওঠার আগে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি। এরপর সকাল ১০টা ৭ মিনিটে কমলাপুরের ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনের ৭ নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে ভাঙ্গা রেল স্টেশন অভিমুখে যাত্রা শুরু করে।

রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, এ রেল লাইন উদ্বোধনের ফলে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থায় এক যুগান্তকারী পরিবর্তন হবে। দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ জীবনযাত্রা সহজ হবে। এর সুফল সারা দেশের মানুষ পাবে।

রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজনের সঙ্গে পরীক্ষামূলক ট্রেন যাত্রায় আরও উপস্থিত আছেন পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাজাহান খান, জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী।

পরীক্ষামূলক এ যাত্রায় সবকিছু পর্যবেক্ষণ করবেন রেলওয়ে ও প্রকল্পের কর্মকর্তারা।

প্রথমবারের মতো ঢাকা-ভাঙ্গা পরীক্ষামূলক যাত্রার জন্য বুধবার ঢাকায় প্রবেশ করে ট্রেনটি। এর আগে ট্র্যাক কার ও মালবাহী ট্রেন পদ্মা সেতু অতিক্রম করলেও এবারই প্রথম যাত্রী বহনের ট্রেনটি প্রবেশ করেছে রাজধানীতে। আর আগামী ১০ অক্টোবর ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ভাঙ্গা পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে ট্রেন চলাচল শুরু হবে। ওই দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নতুন এ রেলপথের উদ্বোধন করবেন।

এর মধ্যে দিয়ে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের নির্বিঘ্নে ও সাশ্রয়ী ভাড়ায় চলতে পারবে। এর মাধ্যমে পদ্মা পাড়ের নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষের ভাগ্যের চাকা ঘুরবে।

পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের মাধ্যমে ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত প্রায় ১৬৯ কিলোমিটার দীর্ঘ নতুন রেলপথ নির্মাণ করছে রেলওয়ে। এর মধ্যে ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত প্রায় ৮২ কিলোমিটার রেলপথ চালু হচ্ছে।

যদিও যশোর পর্যন্ত পুরো প্রকল্প উদ্বোধন হবে ২০২৪ সালের জুনে। এ লক্ষ্য ঠিক করে এগুচ্ছে রেল কর্তৃপক্ষ।

এ প্রকল্পের মাধ্যমে ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ের নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত হবে ঢাকা-যশোর পর্যন্ত পদ্মা সেতু রেল লিংক রুটটি। এ রুট দিয়ে বাংলাদেশের রেলপথ ভারতের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে বেনাপোল-পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে।

ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে নতুন চার জেলা (মুন্সীগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুর ও নড়াইল) অতিক্রম করে যশোরের সঙ্গে রেল যোগাযোগ স্থাপিত হবে।

একই সঙ্গে বিদ্যমান ভাঙ্গা-রাজবাড়ী থেকে কুষ্টিয়া হয়ে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ দিয়ে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের সঙ্গেও যুক্ত হবে এ রেলপথ। ফলে এসব অঞ্চলে কম খরচেই পণ্য ও যাত্রী চলাচল করতে পারবে ঢাকার সঙ্গে।

এর আগে রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন গণমাধ্যমকে বলেছেন, পদ্মা সেতু হয়ে রেলপথ উদ্বোধনের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ১০ অক্টোবর সময় দিয়েছেন। সেদিন একটি সুধী সমাবেশও অনুষ্ঠিত হবে।

প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের এক সপ্তাহ পর থেকে এ পথে বাণিজ্যিকভাবে ট্রেন চলাচল শুরু হতে পারে। শুরুতে একটি ট্রেন পরিচালনা করা হবে। প্রকল্প কার্যালয় থেকে ঢাকা-পদ্মা সেতু-রাজবাড়ী রুটে ট্রেন চালানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।

অন্যদিকে রাজশাহী থেকে ঢাকা পর্যন্ত একটি ট্রেন চালানোর প্রস্তাব রয়েছে। মধুমতি এক্সপ্রেস ট্রেনটি ভাঙ্গা পর্যন্ত আসে। এ ট্রেন ঢাকা পর্যন্ত আনা হতে পারে। পদ্মা সেতু রেল লিংক প্রকল্পের অধীনে চীন থেকে ১০০ নতুন কোচও কেনা হয়েছে। নতুন কোচ দিয়েই ট্রেন চালু করা হবে।

রেলের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, উদ্বোধনের সময় সব স্টেশন এবং পুরো সংকেত ব্যবস্থা হয়তো চালু করা যাবে না। শুরুতে তিনটি স্টেশনে ট্রেন থামার ব্যবস্থা থাকবে। স্টেশনগুলো হচ্ছে মাওয়া, পদ্মা (জাজিরা) ও শিবচর। মুন্সিগঞ্জের নিমতলা স্টেশনটিও চালুর চেষ্টা চলছে।

প্রকল্পের অগ্রগতি প্রতিবেদন অনুসারে, আগস্ট পর্যন্ত প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি হয়েছে ৮২ শতাংশ।

এ প্রকল্পে তিন অংশে বিভক্ত হয়ে কাজ চলমান। প্রথম অংশের ঢাকা-মাওয়া অংশে অগ্রগতি ৮০ দশমিক ৫০ শতাংশ। এ অংশে রেললাইন নির্মাণ শতভাগ হয়ে গেলেও নতুন চার স্টেশনের একটিরও শতভাগ কাজ হয়নি। কাজ বাকি রয়েছে ব্যালাস্টেড ট্রাক ও মেজর দুই ব্রিজের।

আর দ্বিতীয় অংশ মাওয়া-ভাঙ্গার কাজের অগ্রগতি ৯৬ দশমিক ৫০ শতাংশ। ব্যালাস্টেড ট্রাক ও সিগন্যালিংয়ের কাজ বাকি। নতুন চার স্টেশনের দুটির নির্মাণ শেষ, বাকি দুইটি। এছাড়া এ অংশের সব কাজই সম্পন্ন হয়েছে।

অন্যদিকে আগামী বছরের জুনে উদ্বোধনের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া ভাঙ্গা থেকে যশোর অংশের কাজের অগ্রগতি ৭৮ শতাংশ। এ অংশে রেললাইন নির্মাণ প্রায় ৯৯ শতাংশ হয়ে গেলেও নতুন নয় স্টেশনের একটিরও শতভাগ কাজ হয়নি। কাজ বাকি রয়েছে ব্যালাস্টেড ট্রাক ও মেজর একটি ব্রিজের। এসব কাজের সঙ্গে এ অংশে সবচেয়ে বেশি কাজ বাকি রয়েছে সিগন্যালিংয়ের কাজ, রেলপথ নির্মাণ শেষ হলেই শুরু হবে এ কাজ।

প্রসঙ্গত, ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত ১৬৯ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণে ২০১৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে এ প্রকল্প নির্মাণ শুরু করে বাংলাদেশ রেলওয়ে। জিটুজি পদ্ধতিতে এ প্রকল্পে অর্থায়ন করছে চীন। প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত। রেল সংযোগের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৯ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা।


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর