শুক্রবার, ২২শে নভেম্বর ২০২৪, ৮ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | ই-পেপার
ব্রেকিং নিউজ:
  • সারাদেশে জেলা ও উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আগ্রহী হলে আপনার সিভি ই-মেইল করতে পারেন। ই-মেইল daajkaal@gmail.com
সংবাদ শিরোনাম:
  • ঢাকায় আসছেন যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমবিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি কেলি রদ্রিগেজ
  • প্রথমবার সচিবালয়ে যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা
  • এস আলমের ঋণ জালিয়াতি, কেন্দ্রিয় ব্যাংকের ১৩ জনকে তলব
  • সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা
  • ড. ইউনূসের ভিশনের দিকে তাকিয়ে যুক্তরাজ্য: ক্যাথরিন ওয়েস্ট
  • ২০২৫ সালে সরকারি নির্মাণে পোড়া ইট ব্যবহার বন্ধ হবে
  • নাম ও পোশাক বদলাচ্ছে র‌্যাব
  • গণহত্যা মামলায় ৮ পুলিশ কর্মকর্তাকে গ্রেফতারের নির্দেশ
  • আজারবাইজানের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন প্রধান উপদেষ্টা
  • পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনতে সিঙ্গাপুরের সহায়তা চান প্রধান উপদেষ্টা

ছোট গল্প

যেখানে কোন প্যারা নেই

আবদুল মোমেন

প্রকাশিত:
৮ আগষ্ট ২০২৩, ১১:৩৯

মুকসুদপুর বাস স্টেশনে নেমে রিকশায় উঠলাম। রিকশায় চড়ে দুই তিন কিলোমিটার পথ অতিক্রম করার পর কটিয়াদি গ্রামে পৌঁছলাম। জনবহুল গ্রামটি পেছনে ফেলে হাটা শুরু করলাম। 
 
মনে অনেক দুশ্চিন্তা! অস্থিরতা ও হতাশা জেঁকে   বসেছে। মা, বাবা, বউ আর দুই সন্তান নিয়ে সংসার। আমার যা আয় তা দিয়ে পুরো মাস চলেনা। মাস শেষে দেনা হয়ে যায় মেলা টাকা। সেই দেনার দায় মিটাতে হিমশিম খেতে হয়। তার উপর কয়েকটি মাল্টিপারপাস কোম্পানি থেকে মাসিক কিস্তিতে নেওয়া ঋণের কিস্তি পরিশোধ করা অসম্ভব হয়ে দাড়িয়েছে। গ্রামের মেঠোপথ ধরে হেটে চলছি আর দুঃখ ভারাক্রান্ত মনে ভাবছি। 
 
এতো দায় দেনা কি করে মিটাবো। মা বাবার আবদার, বউ বাচ্চার নানা চাহিদা কি করে পূরণ করবো। চরম দুশ্চিন্তার ভেতর হাটতে হাটতে হঠাৎ সংজ্ঞা ফিরলো। তখন নিজেকে গ্রাম থেকে অনেক দূরে আবিষ্কার করলাম। 
 
চারদিকে খোলা মাঠ। মাঠে ফসলি জমি। 
ফসল ফলে নানা জাতের, সারা বছর। চারদিকে সবুজ আর সবুজ। 
 
মাঠের মাঝখানে এঁকেবেঁকে  চলে গেছে মেঠোপথ। 
পথের দু ধারে মেহগনি গাছের সারি, মাঝে মাঝে ঝোপঝাড়। বাতাসে গাছের মগডাল নড়ছে। রোদের আলোতে গাছের ছায়া খেলছে। খোলা মাঠে বাতাসের শনশন শব্দ সুর তুলেছে । 
 
পথে হাঁটতে হাঁটতে  চোখে পড়ল নারিকেল গাছে  ঘেরা বড় একটি পুকুর। পুকুরের সামনের পাড়ে আম গাছের ছায়ায় কাঠের তক্তার বৈঠকখানা। আহ! কি সুন্দর স্নিগ্ধ পরিবেশ! মনোমুগ্ধকর  হিমেল হাওয়ায় হৃদয় ছুঁয়ে যাচ্ছে। 
 
মেঠোপথ ধরে আরো খানিকটা এগোলে  অপূর্ব সুন্দর ছোট্ট  একটি কাচা ঘর। ঘরটি কাচা হলেও সব কিছু পরিপাটি। সামনে বারান্দা। বড় উঠান। উত্তর-দক্ষিণে জানালা। জোছনার আলো রাতে অনায়াসে ভিতরে প্রবেশ করে। দক্ষিণা হাওয়া নির্বিঘ্নে ঘরের ভিতর দিয়ে অতিক্রম করে।
 
এরকম একটা বাড়িতে আমরা বসবাস করছি। মাঠের নানা জাতের ফসলে আমাদের রোজগার। সে রোজগারের অর্থ খরচ করে বছর খুলিয়ে আরো জমা থাকে। কোন টেনশন নেই। নেই কোন প্যারা। আমার মা, বাবা বিকেলে নাতিদের নিয়ে উঠানে খেলছে। বউ পুকুর থেকে তুলে আনা তাজা মাছ রান্না করছে। অনিন্দ্য সুন্দর পরিবেশে চলছে আমার সুখের সংসার। 
 
হটাৎ ঘরের দরজায় প্রচণ্ড শব্দে বউ ডাকছে। উঠো উঠো। কিস্তির টাকার জন্য লোক এসেছে। উঠো…। বউয়ের চেঁচামেচিতে আমার ঘুম ভাঙলো।
 
লেখা: আবদুল মোমেন
তারিখ : ০৭/০৮/২৩

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর