রবিবার, ৬ই অক্টোবর ২০২৪, ২১শে আশ্বিন ১৪৩১ | ই-পেপার
ব্রেকিং নিউজ:
  • সারাদেশে জেলা ও উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আগ্রহী হলে আপনার সিভি ই-মেইল করতে পারেন। ই-মেইল daajkaal@gmail.com
সংবাদ শিরোনাম:
  • পূর্বাঞ্চলে বন্যায় ১৪ হাজার ৪২১ কোটি টাকার ক্ষতি: সিপিডি
  • অভিন্ন জলরাশি নীতিমালা না হলে বন্যাঝুঁকি আরও বাড়বে: রিজওয়ানা
  • ব্যাংক নোটে নতুন নকশা, বাদ যেতে পারে বঙ্গবন্ধুর ছবি
  • মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য মাল্টিপল ভিসা দেওয়ার আহ্বান ড. ইউনূসের
  • ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরীর মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতির শোক
  • সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল হবে: আসিফ নজরুল
  • বৈরী আবহাওয়া, উপকূলীয় অঞ্চলে নৌযান চলাচল বন্ধ
  • শহীদ পরিবারের পক্ষে আজ মামলা করবে নাগরিক কমিটি
  • ৪ বন্দরে ৩ নম্বর সতর্কসংকেত
  • সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা কামালসহ গ্রেপ্তার ৪

বিচারক, আইনজীবি ও বিচারপ্রার্থীরা দুর্ভোগে

৯ বছরেও শুরু হয়নি নেত্রকোণা চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন

মেহেদী হাসান আকন্দ,নেত্রকোণা

প্রকাশিত:
৭ আগষ্ট ২০২৩, ১৭:৪৬


মামলা জট কমাতে এবং এজলাস সংকট দুর করতে নেত্রকোণা চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হলেও তার বাস্তবায়ন থমকে গেছে। কবে নাগাদ বাস্তবায়ন হবে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সূত্র এ বিষয়ে কিছুই বলতে পারছে না। এতে করে ম্যাজিস্ট্রেটের পাশাপাশি আইনজীবি ও বিচারপ্রার্থীরাও নানাভাবে ভোগান্তির শিকার।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, উচ্চ আদালতের রায় অনুযায়ী দেশের নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগ পৃথক হয় ২০০৭ সালের ১ নভেম্বর। এরপর নেত্রকোণা জেলায় চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের নিজস্ব আদালত ভবন স্থাপনের প্রয়োজনে ২০১৪ সালে ২৩ জানুয়ারী নেত্রকোণা পৌর এলাকাধীন চল্লিশা মৌজায় ১.৭৫ একর ভূমি অধিগ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়। চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের নিজস্ব আদালত ভবন নির্মাণ প্রকল্পের জন্য ০৩/২০১৩-২০১৪ নং এল এ কেস মূলে স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণ ও হুকুমদখল অধ্যাদেশ, ১৯৮২ (১৯৮২ সনের ২ নং অধ্যাদেশ) এর আলোকে সদর উপজেলার চল্লিশা মৌজায় ১.৭৫ একর ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়। ভূমি অধিগ্রহণ বাবদ ২০১৪ সালের ১৮ জুন ২,২৫,১৫,৫০৭ (দুই কোটি পঁচিশ লাখ পনের হাজার পাঁচশত সাত) টাকা পরিশোধ করেন। একনেক কর্তৃক অনুমোদিত প্রকল্পটি ২০১৮ সালের জুন মাসের মধ্যে বাস্তবায়নের নির্দেশনা প্রদান করা হয়।
অধিগ্রহণকৃত ভূমি জেলা জজ কোর্ট হতে প্রায় ১.২৯ কিলোমিটার দুরে অবস্থিত হওয়ায় দুটি আদালতের যোগাযোগ সহজ ও সময় সাশ্রয়ী করার উদ্দেশ্যে জেলা জজ আদালত ভবন সংলগ্ন নাগড়া মৌজার ৮০৩ দাগে বাংলাদেশ কৃষি কর্পোরেশনের জায়গা হতে ১.৭৫ একর জায়গা অধিগ্রহণকৃত জায়গার সাথে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, আইন ও বিচার বিভাগ, পরিকল্পনা ইউনিট ২০১৭ সালের ১১ জানুয়ারী ভূমি মন্ত্রণালয় এবং কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর এওয়াজ বদলের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তাব প্রেরণ করেন। প্রস্তাবের বিষয়ে মতামত প্রদানের সুবিধার্থে কৃষি মন্ত্রণালয়, আইন ও বিচার বিভাগ, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, বিএডিসি, প্রকল্প পরিচালক এবং প্রধান সমন্বয়ক সমন্বয়ে একটি আন্ত:মন্ত্রণালয় কমিটি ২০১৮ সালের ৫ জানুয়ারী সরেজমিনে পরিদর্শন করে সুপারিশ প্রদান করেন।
আন্ত:মন্ত্রণালয় কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী বিচারপ্রার্থী জনগনের সুবিধার্থে চল্লিশা মৌজার চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন নির্মাণের জন্য অধিগ্রহণকৃত ১.৭৫ একর জমির পরিবর্তে নাগড়া মৌজায় ৮০৩ দাগে বিএডিসি’র জমি হতে ০.৮২ একর (কমবেশী) জমি এওয়াজ বদলের মাধ্যমে আইন ও বিচার বিভাগের অনূকুলে হস্তান্তর করা যেতে পারে।
আন্ত:মন্ত্রণালয় কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের নাগড়া মৌজায় ৮০৩ দাগে ০.৮২ একর জমি নেত্রকোণা চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন নির্মাণের জন্য অধিগ্রহণকৃত ১.৭৫ একর জমি এওয়াজ বদলের জন্য অনাপত্তি জ্ঞাপন করে ২০১৮ সালের ২৬ জুন কৃষি মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোর্শেদা আক্তার স্বাক্ষরিত পত্র প্রেরণ করেন।
২০১৮ সালের ২৩ জুলাই আইন ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, আইন ও বিচার বিভাগ, পরিকল্পনা ইউনিটের সিনিয়র সহকারী প্রধান মোহাম্মদ মেহেদী হাসান প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন।
২০১৮ সালের ২০ নভেম্বর গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ বাহাদুর আলী চীফ জুডিসিয়াল আদালত ভবন নির্মাণের জন্য অধিগ্রহণকৃত ১.৭৫ একর জমি এওয়াজ বদলের বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নেত্রকোণা চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে অনুরোধ করেন।
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের নাগড়া মৌজায় ৮০৩ দাগের ০.৮২ একর জমি নেত্রকোণা চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনের জন্য চল্লিশা মৌজায় ১.৭৫ একর জমি এওয়াজ বদলের জন্য নেত্রকোণা গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ বাহাদুর আলী ২০১৯ সালের ১০ ফেব্রুয়ারী বাংলাদেশের ৬৪ জেলা সদরে চীফ জুডিসিয়াল ভবন নির্মাণ ১ম পর্যায় (২য় সংশোধিত) শীর্ষক প্রকল্প পরিচালক বরাবর লিখিতভাবে অবহিত করেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, নেত্রকোণা জেলা জজশীপে ৩০ হাজার ১ ’শ ৪০ টি দেওয়ানী মামলা এবং ৩ হাজার ৯ ’শ ৭১ টি ফৌজদারী মামলা রয়েছে। চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ২ হাজার ৪ ’শ ২ টি আমলী মামলা এবং ৩ হাজার ৭ ’শ ৯৬ টি বিচারাধীন মামলা রয়েছে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যাল আদালতে ৪ হাজার ৬ ’শ ১৫ টি মামলা রয়েছে। মোট ৪৪ হাজার ৯ ’শ ২৪ টি মামলা রয়েছে।
চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নাজির মুহাম্মদ নুরুজ্জামান জানান, নিজস্ব আদালত ভবন না থাকায় জজ কোর্টের সাথে ভাগাভাগি করে বিচার কার্যক্রম পরিচালনা করতে হয়। একই চেম্বারে একাধিক ম্যাজিস্ট্রেট বসতে হয় এবং এজলাসে একাধিক কোর্ট পরিচালনা করতে হয়। তাছাড়াও মামলার নথিপত্র রাখার জন্য জায়গার সংকট এবং স্টাফদের বসে কাজ করার জায়গার সংকট দিন দিন প্রকট আকার ধারন করছে। কৃষি মন্ত্রণালয়ের সাথে জমি এওয়াজ বদলের জন্য অনাপত্তি পাওয়ার পরও দীর্ঘদিন ধরে চীফ জুডিসিয়াল আদালত ভবন নির্মাণ কার্যক্রম থমকে রয়েছে।
জেলা আইনজীবি সমিতির সভাপতি ব্যোমকেশ ভট্টাচার্য্য বলেন, চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের নিজস্ব ভবন না থাকায় এজলাস সংকটের কারণে অনেক ভোগান্তি পেতে হয়। জজ কোর্টের বারান্দায় অস্থায়ী এজলাস তৈরি করে আদালতের কার্যক্রম পরিচালনা করতে হচ্ছে। তাছাড়াও প্রত্যেকটা আদালতের বিচারিক সময় দুটো আদালতকে ভাগাভাগি করে এজলাস চালাতে হয়। যদি পুরো সময় একটা এজলাসের জন্য দেওয়া যেতো তাহলে দ্বিগুন মামলা নিস্পত্তি হতো।
নেত্রকোণা গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ হাসিনুর রহমান বলেন, চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট উদ্যোগ গ্রহণ করে আইন ও বিচার এবং কৃষি মন্ত্রণালয়ের মধ্যে এওয়াজ বদল দলিল সম্পন্ন করলেই চীফ জুডিসিয়াল আদালত ভবন নির্মাণ করা সম্ভব।

 

 


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর