লক্ষ্মীপুর শহরের সামাদ মোড় এলাকায় এলোপাতাড়ি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক তৈরি করে একটি স্বর্ণের দোকানে ডাকাতি করেছে দুর্বৃত্তরা। বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ওই এলাকায় আর কে শিল্পালয়ে এ ঘটনা ঘটে। ডাকাতি করে পালিয়ে যাবার সময় ইটেরপুল এলাকায় ডাকাতদলের গাড়ি চাপায় এক বৃদ্ধ পথচারী নিহত হয়। ঘটনাস্থল থেকে দুইজনকে আটক করা হয়। তারা ডাকাতির ঘটনার সাথে জড়িত ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ। তাদেরকে সদর থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। তবে তাদের নাম পরিচয় জানা যায়নি।
এদিকে বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন লক্ষ্মীপুরের পুলিশ সুপার মো. মাহফুজ্জামান আশরাফ। তিনি বলেন, ডাকাতি করে পালিয়ে যাওয়ার সময় ডাকাতদলের দুইজনকে আটক করা হয়। এ ঘটনায় ডাকাতদের পিকআপের চাপায় এক পথচারী নিহত হয়েছেন। আটকদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ঘটনাটির তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত বলা যাবে।
এদিকে জেলা বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি করেন।
জানা গেছে, ঘটনার সময় দুর্বৃত্তরা ওই শিল্পালয়ের মালিক অপু কর্মকারকে কুপিয়ে আহত করে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে ঢাকায় প্রেরণ করেন। ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। ঘটনাস্থল ও আশপাশ এলাকা থেকে বেশ কিছু ককটেল উদ্ধার করেছে পুলিশ। তবে দুর্বৃত্তরা কী পরিমাণ স্বর্ণ লুট করে নিয়ে গেছে, তাও এখন নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
প্রত্যক্ষদর্শী বাজারে ব্যবসায়ীরা জানান, সন্ধ্যায় একটি পিকআপ ভ্যানে করে ৮-১০ জন অস্ত্রধারী দুর্বৃত্ত এসে এলোপাতাড়ি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। এ সময় চারদিকে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ককটেলের ধোঁয়ায় অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে গোটা এলাকা। পরে দুর্বৃত্তরা আর কে শিল্পালয়ে ঢুকে স্বর্ণালংকার লুট করে অল্প সময়ের মধ্যেই পিকআপ ভ্যান যোগে পালিয়ে যায়। ঘটনার সময় দোকান মালিক অপু কর্মকারকে কুপিয়ে জখম করে যায় দুর্বৃত্তরা।
স্থানীয়রা জানায়, ডাকাতদল পিকআপ ভ্যান যোগে দ্রুতগতিতে পালিয়ে যাবার সময় ঢাকা-রায়পুর মহাসড়কের ইটেরপুল এলাকায় তাদের গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে পড়ে যায়। এ সময় সেখানে থাকা সফি উল্যা (৬০) নামে একজন পথচারী নিহত হন। নিহত সফি উল্যা পৌরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম লক্ষ্মীপুর এলাকার মৃত মফিজ উল্যার ছেলে। তিনি রাস্তা নির্মাণের শ্রমিক ছিলেন। তার মৃতদেহ সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
এ সময় আহত হয়েছেন ইসমাইল হোসেন (৫৫)। সে একই এলাকার মনু মিয়ার ছেলে। তাকেও চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন: