প্রকাশিত:
১৬ জুন ২০২৫, ১৫:৩৮
সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং থেকে ফেরার পথে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দুই উপদেষ্টার গাড়ি আটকে বিক্ষোভ প্রদর্শনের ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। রবিবার (১৫ মে) গোয়াইনঘাট থানার উপপরিদর্শক ওবায়দুল্লাহ বাদি হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
যুবদলের সদস্য বহিষ্কৃত নেতা জাহিদ খানকে প্রধান আসামি করে ১৫৯ জনের বিরুদ্ধে মামলাটি করা হয়েছে। মামলায় ৯ জনের নাম উল্লেখ করে আরো ১৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেটের পুলিশ সুপার মাহবুবুর রহমান। তিনি বলেন, ‘ঘটনার পর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারিত ভিডিও ফুটেজ দেখে অভিযুক্তদের শনাক্ত করতে কিছুটা সময় লেগেছে।’ তিনি জানান, দ্রুত অপরাধীদের ধরতে অভিযানে নেমেছে পুলিশ।
গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরকার তোফায়েল আহমেদ জানান, মামলায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বেআইনিভাবে সংঘবদ্ধ হয়ে অবৈধভাবে গতিরোধ করে বাধা ও অবৈধভাবে অবরোধ করে সরকারি কর্মচারীকে সরকারি কাজে বাধা দান করার অভিযোগ আনা হয়েছে।
গত শনিবার সিলেটের জাফলং পাথর কোয়ারি এলাকা পরিদর্শন করতে আসেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দুই উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান ও সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। সেখান থেকে ফেরার পথে বল্লাঘাট এলাকায় তাদের গাড়ির গতিরোধ করে বিক্ষোভ জানাতে থাকেন পাথর শ্রমিকরা। এসময় তারা ‘ভুয়া’, ‘ভুয়া’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন।
ঘটনার ছবি ও ভিডিওতে দেখা গেছে, আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক নেতা জাহিদ খান, ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি আজির উদ্দিন, জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি সুমন শিকদার, জেলা ছাত্রদলের সহসাধারণ সম্পাদক সোহেল আহমদ, উপজেলা শ্রমিক দলের সভাপতি আবদুল জলিল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুস সালাম, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক রমজান মোল্লা ও উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক জাহিদ খান প্রমুখ।
এ ঘটনার পর দিন রবিবার যুবদল নেতা জাহিদ খানকে বহিষ্কার করে যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটি। এ ছাড়া একই ঘটনায় রবিবার সন্ধ্যায় পূর্ব জাফলং ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি আজির উদ্দিনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দেওয়া হয়। এতে তাকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সশরীর উপস্থিত হয়ে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, এদিন পাথর কোয়ারি ঘুরে দেখার পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘সিলেটের আর কোনো পাথর কোয়ারি খুলে দিবে না সরকার। জাফলং পর্যটনকেন্দ্রকে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
এমনটি করা গেলে এ অঞ্চলের পাথর শ্রমিকদের বিকল্প কর্মসংস্থান তৈরি হবে।’
সৈয়দা রিজওয়ানা বলেন, ‘জাফলং ইসিএ এলাকা থেকে অবৈধভাবে বালু ও পাথর উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে এরকম অবৈধ কার্যক্রমের সঙ্গে কেউ জড়ালে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এসময় বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন করে জাফলং ও আশেপাশের এলাকার পরিবেশ ধ্বংস করা হচ্ছে। জাফলংয়ের অবৈধ পাথর ক্রাশারের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে।’
এরপর তারা ফিরে আসার সময় বল্লাঘাট এলাকায় তাদের গাড়ির গতিরোধ করে পাথর কোয়ারি খুলে দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ শুরু হয়।
মন্তব্য করুন: