সোমবার, ৯ই জুন ২০২৫, ২৬শে জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ | ই-পেপার
ব্রেকিং নিউজ:
  • সারাদেশে জেলা ও উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আগ্রহী হলে আপনার সিভি ই-মেইল করতে পারেন। ই-মেইল daajkaal@gmail.com
সংবাদ শিরোনাম:
  • ওয়ারেন্ট না থাকায় আবদুল হামিদকে গ্রেপ্তার করা হয়নি
  • গত অর্থবছরকে ছাড়িয়ে গেছে ১১ মাসের রপ্তানি আয়
  • ভোটারদের নিয়ে নিজেই শপথ পড়ে চেয়ারে বসে পড়ব
  • টাঙ্গাইলে মহাসড়কে ডাকাতি
  • রাজশাহীতে ৫৭ কেজি গাঁজাসহ মাদক কারবারি গ্রেফতার
  • মানুষকে দু-মুঠো খাওয়ার নিশ্চয়তা দেওয়ার দল বিএনপি
  • করাচিতে জেল ভেঙ্গে পালিয়েছে দুই শতাধিক কয়েদি
  • আগামী বিশ্বকাপের জন্য ভারতের চার ভেন্যু চূড়ান্ত, পাকিস্তান খেলবে কোথায়?
  • সমান্তরাল বিষাদ
  • চাকরিপ্রার্থীদের জন্য গুগলের নতুন এআই টুল ‘ক্যারিয়ার ড্রিমার

পুরুষের আত্মমর্যাদায় আঘাত হানে স্ত্রীর বেশি আয়? যা বলছে গবেষণা

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত:
২৪ মে ২০২৫, ১৩:৫০

একজন পুরুষ যদি স্ত্রী বা সঙ্গিনীর তুলনায় কম আয় করেন, তাহলে তা তার মানসিক স্বাস্থ্যে বড় ধাক্কা দিতে পারে। সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, পরিবারে আয়কারী হিসেবে ভূমিকা বদলালে পুরুষরা হীনমন্যতায় ভোগেন, যা ডিপ্রেশনসহ নানা মানসিক সমস্যার কারণ হতে পারে।

ডেভ, টম ও ব্রেন্ডন—তিনজনই ছিলেন এমন এক গবেষণার অংশ, যেখানে নারীরা পরিবারের মূল উপার্জনকারী। তারা বলছেন, সমাজে এখনো পুরুষদের ওপর প্রধান উপার্জনকারী হওয়ার চাপ রয়ে গেছে। কাজ না থাকলে পুরুষরা যেমন হতাশ হয়ে পড়েন, তেমনি স্ত্রী আয় করলে নিজের মর্যাদা কমে গেছে বলেও মনে করেন অনেকে।

একজন বললেন, “আমি বাড়িতে থাকি, আর সবাই ভাবে আমি কোনো 'নরম' পুরুষ।” আরেকজন বললেন, “আমার আত্মীয়রা আমাকে 'বাড়ির চাকর' বলে ডাকে।”

বিশেষজ্ঞদের মতে, অর্থ মানেই শুধু প্রয়োজন নয়, এটি শক্তি, নিয়ন্ত্রণ ও পরিচয়ের প্রতীক। এই পরিচয় হারালে পুরুষেরা নিজেদের পরাজিত ভাবেন। গবেষণা অনুযায়ী, যখন পুরুষেরা চাকরি হারান বা কম আয় করেন, তখন তাদের মধ্যে হতাশা ও মানসিক রোগের প্রবণতা বাড়ে, এমনকি বিবাহবিচ্ছেদের আশঙ্কাও বাড়ে।

সুইডেনের একটি দশ বছরের আয় তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, যখন স্ত্রীরা স্বামীদের চেয়ে বেশি আয় করতে শুরু করেন, তখন স্বামীদের মধ্যে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার হার ১১% পর্যন্ত বেড়ে যায়। নারীদের ক্ষেত্রেও এটি বাড়ে, তবে মাত্র ৮%।

তবে আশার কথা হলো, অনেক পুরুষ এখন আগের চেয়ে বেশি সময় সন্তানদের সঙ্গে কাটাচ্ছেন, পরিবারকে সময় দিচ্ছেন। এতে শিশুরা সমতা দেখে বড় হচ্ছে। সুইডেনের মতো দেশে পুরুষদের জন্য ‘পিতৃত্বকালীন ছুটি’ বাধ্যতামূলক হওয়ায় পরিবারে সমতা বাড়ছে।

তবে এই পরিবর্তনের পথে রয়েছে সামাজিক বাধা। কিংস কলেজ লন্ডনের এক জরিপে দেখা গেছে, সবচেয়ে তরুণ প্রজন্ম (১৮-২৮ বছর) ‘ঘরে থাকা বাবা’দের অনেকেই এখনো বিষয়টিকে ‘পুরুষোচিত’ ভাবেন না। ২৮% তরুণ পুরুষ মনে করেন—এটি তাদের ‘পুরুষত্ব’ হ্রাস করে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই মনোভাব পরিবর্তনের জন্য স্কুল পর্যায়েই 'পুরুষত্ব', 'নারীবাদ' এবং 'সমতা' নিয়ে শিক্ষার ব্যবস্থা করা উচিত। আর সমাজে ইতিবাচক বার্তা দেওয়া উচিত যে—একজন পুরুষের মূল্য শুধুমাত্র তার উপার্জনের ওপর নির্ভর করে না। বিভিন্ন গবেষক বলছেন, “পুরুষ মানেই প্রধান আয়কারী হতে হবে”—এই ধারণা বদলাতে হবে।

নারীরা আয় বাড়ালে শুধু পরিবার নয়, পুরো সমাজ উপকৃত হয়। পুরুষদের যদি পরিবারকেন্দ্রিক ভূমিকা নিতে উৎসাহ দেওয়া হয়, তবে তা তাদের আত্মসম্মান ফিরিয়ে আনতে সহায়ক হতে পারে। সময় এসেছে নতুন মানসিকতা গড়ার।

 


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর