সোমবার, ১৯শে মে ২০২৫, ৫ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ | ই-পেপার
ব্রেকিং নিউজ:
  • সারাদেশে জেলা ও উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আগ্রহী হলে আপনার সিভি ই-মেইল করতে পারেন। ই-মেইল daajkaal@gmail.com
সংবাদ শিরোনাম:
  • ঢাকাসহ ১৮ অঞ্চলে ঝড়ের শঙ্কা নদীবন্দরে সতর্কতা
  • পাকিস্তানে লস্কর নেতাকে গুলি করে হত্যা
  • বন্ধ হচ্ছে না ‘মব সন্ত্রাস’ বাড়ছে আতঙ্ক-উদ্বেগ
  • নগর ভবন এলাকা ‘ব্লকেড’, উপদেষ্টা আসিফের পদত্যাগ দাবি
  • কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মানবজাতির ভবিষ্যৎ- আশীর্বাদ নাকি অভিশাপ
  • সুখ পেতে অতীত ভুলতে হবে না
  • ট্রাম্পের মন্তব্যের জবাবে পাকিস্তানের কড়া বার্তা
  • মানবেতর জীবনযাপন করছেন হাজারো বাংলাদেশী প্রবাসী
  • জামিন না পেয়ে এজলাস কক্ষে কাঁদলেন পর্দার হাসিনা
  • নাগরপুরে ধান চাষে কৃষকের মুখে হাসি

বিশ্বব্যাপী ছড়ানো ছারপোকা নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত:
১৭ মে ২০২৫, ১৬:৫৬

মানবজাতির রাসায়নিক অস্ত্রাগারের বিরুদ্ধে টিকে থাকার জন্য একটি ভয়ংকর জিনগত পরিবর্তন খুঁজে পাওয়া গেছে এক অপ্রত্যাশিত জায়গায়-সাধারণ ছারপোকা -এর জিনোমে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে রাসায়নিক বিপ্লবের মাধ্যমে, বিশেষ করে বরবাদ হওয়া কীটনাশক ডিডিটি-এর মাধ্যমে আমরা এক সময় এই চুলকানিদায়ক শয্যা পোকাগুলোকে নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছিলাম। তবে ২০০০ সালের পর থেকে তারা আবারও মানুষের জীবনে ফিরে এসেছে এবং বিশ্বব্যাপী ভ্রমণ করছে মানুষের সাথেই। অনেক ক্ষেত্রেই আধুনিক কীটনাশকেও তারা অক্ষত থেকে যাচ্ছে।

এই রহস্যের কারণ খুঁজে বের করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া টেকনোলজিক্যাল ইনস্টিটিউট এবং স্টেট ইউনিভার্সিটির একদল কীটতত্ত্ববিদ।

বিশ্বজুড়ে ছারপোকা দুটি প্রজাতির হলেও সবচেয়ে বিস্তৃত হলো ক্রিমেক্স লিকু্যলারিয়াস। গবেষণার জন্য ২০০৮ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ২২টি রাজ্য এবং কানাডার ৪টি প্রদেশ থেকে সংগ্রহ করা ১৩৪টি ভিন্ন শয্যা পোকা জনসংখ্যা থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়। যেহেতু এই পোকাগুলোর মধ্যে সাধারণত জিনগত বৈচিত্র্য কম থাকে, তাই প্রতিটি জনসংখ্যা থেকে একটি করে নমুনাই যথেষ্ট ছিল।

গবেষকরা দুটি নমুনায় এমন একটি পয়েন্ট মিউটেশন খুঁজে পান, যা স্নায়ুতন্ত্র সংশ্লিষ্ট রাসায়নিক পথে একটি অ্যামিনো অ্যাসিড পরিবর্তনের মাধ্যমে কীটনাশক প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করে।

গবেষক ড. বোথ বলেন, “আমরা পরে ঐ দুটি জনসংখ্যা থেকে আরও কয়েকটি নমুনা বিশ্লেষণ করি এবং দেখি, প্রতিটি পোকার মধ্যেই একই মিউটেশন রয়েছে। এটি একই রকম জিনগত পরিবর্তন যা আমরা জার্মান তেলাপোকার মধ্যেও পাই।”

এই মিউটেশনটি এ৩০২এস রেডি জিন মুটেশন নামে পরিচিত, যা ১৯৪০-এর দশকে তৈরি ডিএলড্রিন নামক কীটনাশকের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। যদিও ডিডিটি-এর বিকল্প হিসেবে তৈরি করা হলেও ডিএলড্রিন পরিবেশে দীর্ঘস্থায়ী থেকে খাদ্যশৃঙ্খলে জমা হয়ে মানবস্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন প্রাণীর জন্য বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। তাই ১৯৮০ ও ১৯৯০-এর দশকে এটি অধিকাংশ দেশেই নিষিদ্ধ করা হয়।

কিন্তু ডিএলড্রিন-এর গঠনগত মিল আছে আধুনিক কীটনাশক ফিপ্রনীল-এর সাথে, যা বর্তমানে ঘরোয়া পোকামাকড় (যেমন তেলাপোকা ও পিসু) দমনে ব্যবহৃত হয়। যদিও এটি শয্যা পোকা দমনের জন্য বিক্রি হয় না, পরীক্ষাগারে এটি কার্যকর হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে।

ফিপ্রোনিলের বিরুদ্ধে জার্মান তেলাপোকা যেমন প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জন করেছে, তেমনি সেই একই রেডি মিউটেশনের কারণে শয্যা পোকাও এখন এই কীটনাশক সহ্য করতে পারছে। তবে এই মিউটেশন নতুনভাবে সৃষ্টি হয়েছে কিনা, নাকি এটি বহু আগেই ছিল, সে বিষয়ে নিশ্চিত নয় গবেষকরা।

ড. বোথ বলেন, “এই মিউটেশন ১০০ বছর আগেও ছিল কি না, নাকি সাম্প্রতিক সময়ে বিকশিত হয়েছে, তা এখনো অজানা।”

উল্লেখ্য, ডিএলড্রিন বন্ধ হওয়ার আগ পর্যন্ত শয্যা পোকাগুলোর এটি গ্রহণের প্রচুর সুযোগ ছিল, এবং বর্তমানে ফিপ্রোনিল পোষা প্রাণীর পিসুনাশক হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ায় সংস্পর্শ অব্যাহত রয়েছে।

গবেষকরা এখন শয্যা পোকাদের জিনোম বিশ্লেষণ করেছেন এবং ভবিষ্যতে আরও বেশি এলাকা ও সময়কাল থেকে সংগৃহীত নমুনার মাধ্যমে এদের বিবর্তনগত ইতিহাস আরও স্পষ্ট করতে চান।

এই গবেষণা জার্নাল অফ মেডিকেল এন্টোমোলজি এবং জার্নাল অফ হেরিডিটি-তে প্রকাশিত হয়েছে।


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর