প্রকাশিত:
১২ মে ২০২৫, ১৬:৪৩
গ্রীষ্মের প্রচণ্ড গরমে বাইরে থেকে ঘামে ভেজা শরীরে বাড়ি ফিরে একগ্লাস ঠান্ডা পানি যেন স্বর্গসুখের মতো মনে হয়। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে— ঠান্ডা পানি খাওয়া কি সত্যিই শরীর ঠান্ডা রাখে? নাকি এতে কিছু ক্ষতির আশঙ্কা লুকিয়ে আছে?
বাংলাদেশে গ্রীষ্মকাল ধীরে ধীরে ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। চলতি বছরের মে মাসে দেশের কিছু এলাকায় তাপমাত্রা ছাড়িয়েছে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই অবস্থায় প্রায় সবাই ঝুঁকছেন ঠান্ডা পানির দিকে।
ঠান্ডা পানি কীভাবে শরীরে কাজ করে?
বিশেষজ্ঞদের মতে, শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের জন্য মস্তিষ্ক কাজ করে ‘থার্মোস্ট্যাটের মতো। আপনি যখন ঠান্ডা পানি পান করেন, শরীরের ভেতরের তাপমাত্রা সাময়িকভাবে কমে যায়। এতে কিছুক্ষণ আরাম বোধ হয় এবং ঘাম কমে যেতে পারে।
চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা বলছেন, গরমে হালকা ঠান্ডা পানি শরীরের জন্য ভালো, এটি দ্রুত রিহাইড্রেট করে। তবে অত্যন্ত ঠান্ডা বা বরফ দেওয়া পানি হঠাৎ পান করা বিপদজনক হতে পারে।
খুব ঠান্ডা পানি খেলেই বিপদ
যদিও ঠান্ডা পানি সাময়িক আরাম দেয়, তবে একবারে বেশি ঠান্ডা পানি খেলেই উল্টো সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেমন-
গলা বসে যাওয়া: ঘেমে থাকা অবস্থায় বরফ ঠান্ডা পানি খেলে গলা ব্যথা বা ইনফ্লেমেশন হতে পারে।
হজমে সমস্যা: ঠান্ডা পানি পাকস্থলীর রক্তনালীগুলো সংকুচিত করে, হজম ধীর করে দেয়।
বমি বমি ভাব বা মাথা ঘোরা: অতিরিক্ত ঠান্ডা পানি পান করলে শরীরে হঠাৎ তাপমাত্রার পার্থক্য তৈরি হয়, যা মাথা ঘোরানো বা অস্বস্তি সৃষ্টি করতে পারে।
এই গরমে কী করবেন?
ঘরের তাপমাত্রার পানি অথবা হালকা ঠান্ডা পানি (ফ্রিজে রাখা নয়) পান করুন
দিনে ৮–১০ গ্লাস পানি পান নিশ্চিত করুন।
একসঙ্গে অনেক পানি না খেয়ে, ধীরে ধীরে অল্প অল্প করে খান।
শরবতা পান করুন। লেবু, পুদিনা বা শসা দিয়ে পানি ফ্লেভার করে পান করুন—এটি শরীর ঠান্ডা রাখে।
বাইরে থেকে এসে বা কায়িক পরিশ্রমের পরে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে পানি পান করুন।
বিশেষ পরামর্শ
বিশেষ করে শিশু, বয়স্ক ও ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে হঠাৎ ঠান্ডা পানি খাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। তাদের ক্ষেত্রে আরও সাবধান থাকা উচিত।
গরমে ঠান্ডা পানি খাওয়া উপকারী—যদি তা সঠিক মাত্রায় ও সঠিকভাবে করা হয়। সাময়িক আরামের জন্য আমরা অনেক সময় দীর্ঘমেয়াদি সমস্যার দিকে অজান্তেই এগিয়ে যাই। তাই সতর্ক থাকা জরুরি।
শুধু ঠান্ডা পানি নয়, পর্যাপ্ত বিশ্রাম, সঠিক খাবার, সান প্রটেকশন এবং সচেতনতা—এই চারটি বিষয়ই আপনাকে গ্রীষ্মকালীন অসুস্থতা থেকে বাঁচাতে পারে।
মন্তব্য করুন: