প্রকাশিত:
২৯ আগষ্ট ২০২৪, ১২:২২
এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলমের ব্যক্তিগত সচিব (পিএস) আকিজ উদ্দিনের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে, এমন চারটি প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবে ৯৯ কোটি টাকার হদিস পেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। এসব হিসাব অবরুদ্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ব্যাংকগুলোকে। এর ফলে এসব হিসাব থেকে টাকা তোলার সুযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।
একই সঙ্গে বিএফআইইউয়ের নির্দেশনায় আকিজ উদ্দিনের স্ত্রী ও সন্তানের নামে থাকা হিসাব ও তাদের মালিকানাধীন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবও স্থগিত করতে বলা হয়েছে।
এস আলমের ব্যক্তিগত সচিবের পাশাপাশি আকিজ উদ্দিন ছিলেন ইসলামী ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক। সরকার পরিবর্তনের পর তাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে ব্যাংকটি। গতকাল তার পদত্যাগ ব্যাংকটির পুনর্গঠিত পরিচালনা পর্ষদে অনুমোদিত হয়।
জানা যায়, সাইফুল আলম সিঙ্গাপুরে স্থায়ী হওয়ার কারণে সাত বছর ধরে তার পক্ষে গ্রুপের ব্যাংকগুলো পরিচালনা করতেন আকিজ উদ্দিন। এসব ব্যাংকে নিয়োগ, কেনাকাটা, পদোন্নতি ও ঋণ বিতরণ—সবই নিয়ন্ত্রণ করতেন তিনি। গ্রুপটির পক্ষে নামে-বেনামে ঋণ নেওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংকসহ রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন সংস্থাকে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রভাবিত করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। নিজেকে গ্রুপের বিকল্প চেয়ারম্যান হিসেবেও পরিচয় দিতেন। তাকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের কক্ষ ও গভর্নরের বাসভবনেও দেখা যেত।
আকিজ উদ্দিন এস আলমের একই থানাধীন পটিয়ার বাসিন্দা। তিনি ১৯৯৭ সালে এসএসসি পাস করে পটিয়া সরকারি কলেজে ভর্তি হন। সেখান থেকে এইচএসসি ও স্নাতক পাস করে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকে যোগ দেন। এর কিছুদিন পর ব্যাংকটির চেয়ারম্যান সাইফুল আলমের ব্যক্তিগত সচিব হিসেবে কাজ পান। ২০২১ সালে তিনি ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের এভিপি হিসেবে পদোন্নতি পান। ২০২৩ সালের এপ্রিলে ইসলামী ব্যাংকের ডিএমডি হিসেবে যোগ দেন তিনি। ব্যাংক খাতে তার মতো এত দ্রুত ডিএমডি হিসেবে পদোন্নতি এর আগে কেউ পাননি বলে জানিয়েছেন শীর্ষ দুটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
এদিকে ব্যাংক-আর্থিক প্রতিষ্ঠান বরাবর পাঠানো বিএফআইইউর চিঠিতে বলা হয়েছে, লেনদেন স্থগিত করার এ নির্দেশের ক্ষেত্রে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ বিধিমালা সংশ্লিষ্ট ধারা প্রযোজ্য হবে। সংস্থাটির দেওয়া চিঠিতে আকিজ উদ্দিনসহ তার পরিবারের সদস্যদের নাম, জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য দেওয়া হয়েছে।
সেখানে বলা হয়েছে, কোনো হিসাব স্থগিত করা হলে হিসাব সংশ্লিষ্ট তথ্য বা দলিল (হিসাব খোলার ফরম, কেওয়াইসি ও লেনদেন বিবরণী) চিঠি দেওয়ার তারিখ থেকে পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে তাদের কাছে পাঠানোর জন্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে বলা হয়েছে।
মন্তব্য করুন: