প্রকাশিত:
৩ আগষ্ট ২০২৪, ১৫:৫৮
টানা দুইদিনের বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে জেলার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানি বন্দী হয়ে পড়েছে কয়েক হাজার মানুষ।
শুক্রবার (২ আগস্ট) দুপুরের পর খাগড়াছড়ি পৌর এলাকার বাস টার্মিনাল, শব্দমিয়া পাড়া, গঞ্জপাড়া, অপর্ণা চৌধুরী পাড়া, ফুটবিলসহ কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা যায় সমস্ত এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। বাসাবাড়িতে প্রবেশ করেছে বন্যার পানি। বিশেষ করে শব্দ মিয়া পাড়া, মেহেদী বাগ এলাকায় পানিতে তলিয়ে গেছে অধিকাংশ ঘরবাড়ি। আকস্মিক এই বন্যায় দুরবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্তদের অনেকেই জানিয়েছেন, হঠাৎ করে পানি বেড়ে যাওয়ায় ঘর থেকে বের করতে পারেননি জিনিসপত্র। টিভি ফ্রিজসহ অনেক আসবাবপত্র পানিতে তলিয়ে আছে। স্রোতে ছোটখাটো অনেক জিনিস ভেসে গেছে। এছাড়াও টানা দুইদিনের বৃষ্টিপাতে জেলা সদরের দুই-একটি জায়গায় পাহাড় ধস হলেও বড় ধরনের কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। জেলা সদরের কলাবাগান এলাকায় আজ সকালে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে। গতকাল বিকেলে জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনারের বাসভবনের সীমানা প্রাচীর ধসে পড়েছে।
এছাড়া জেলা সদরের কলাবাগান, শালবাগান, রসুলপুর এলাকায় পাহাড় ধসের ঝুঁকি দেখা দিয়েছে। মূলত: পাহাড় কেটে যেসব ঘরবাড়ি তোলা হয়েছে, সেই সব স্থানে পাহাড় ধসের ঝুঁকি বেশি।
খাগড়াছড়ি পৌরসভার হিসেব মতে, পৌর এলাকায় অন্তত: ২০০ পরিবার পাহাড় ধসের ঝুঁকির মধ্যে বসবাস করে।
খাগড়াছড়ি পৌরসভার মেয়র নির্মলেন্দু চৌধুরী জানান, বন্যার্তদের জন্য আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। পাহাড় ধসের ঝুঁকিতে থাকাদের নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে আসার কাজ চলছে।
এদিকে জেলায় বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। এতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন স্থানীয়রা। খাগড়াছড়ির দীঘিনালার ২য় শ্রেণীর আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের সহকারী পরিচালক আব্দুর রহিম জানান , গত ২৪ ঘন্টায় ৯১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রের্কড করা হয়েছে।
খাগড়াছড়ির পৌর শহরের বাসিন্দা আয়েশা আক্তার জানান, আমার ঘর-বাড়ি তলিয়ে গেছে। ঘরের জিনিসপত্র নিয়ে নাপ্পি বাজারে এসে বসে আছি।
আরেক বাসিন্দা মরিয়ম বেগম বলেন- এই নিয়ে তিন বার ডুবছে। ভোর থেকে পানি ঢোকা শুরু হয়ে এখন ঘর-বাড়ি সব নিমজ্জিত। শহরের আরেক বাসিন্দা তোফায়েল মিয়া জানান, ঘরের জিনিসপত্র সব নষ্ট হয়ে গেছে। ভোরবেলায় পানি ঢুকেছে। বৃষ্টি না নামলে পানি কমারও সম্ভাবনা নেই। বৃষ্টি বাড়লে আরো দুর্ভোগ বাড়বে।
ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকায়,চেংগী ও মাইনী নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে ।
দীঘিনালার মেরুং ও কবাখালীর নদী পাড়ের কৃষিজমি পানিতে তলিয়ে গেছে। ভারী বর্ষণের কারণে এখানে পাহাড় ধসের আশঙ্কায় রয়েছে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার পরিবার। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে জেলা শহরের বিভিন্ন স্থানে ১০টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান জানান, প্রবল বর্ষণে জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় দুর্গত মানুষদের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। তারা যে কোন ধরণের পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুতি রয়েছে।
মন্তব্য করুন: