প্রকাশিত:
৬ জুলাই ২০২৪, ১১:৫৬
রাজধানীর মিরপুরে অবস্থিত দেশের জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানে (বোটানিক্যাল গার্ডেন) প্রবেশের টিকিটের মূল্য গত বৃহস্পতিবার থেকে পাঁচ গুণ বাড়িয়ে দেওয়ার কারণে দর্শনার্থীও ব্যাপক কমেছে। অনেকে বোটানিক্যাল গার্ডেনের গেটে এসেও টিকিটের দাম শুনে চলে যাচ্ছেন পাশের জাতীয় চিড়িয়াখানায়।
গতকাল শুক্রবার সরেজমিনে গিয়ে এমন পরিস্থিতি দেখা যায়। সকালে প্রবেশ ফি কমানোর দাবিতে উদ্যানটির মূল ফটকের সামনে মানববন্ধন করে বিভিন্ন সংগঠন।
অনেক দর্শনার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ২০ টাকা টিকিটের মূল্য ৪০ থেকে ৫০ টাকা হতে পারে, কিভাবে তা ১০০ টাকা হয়?
দুপুর আড়াইটার দিকে উদ্যানের ইজারাদার মেসার্স সাগর এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, অনেকে এসে দাম শুনে চলে যাচ্ছেন পাশের চিড়িয়াখানায়। এভাবে দুই দিন ধরে অনেক দর্শনার্থী কমে এসেছে। প্রথম দিন ৪৪০ জনের মতো দর্শনার্থী এসেছেন। আজও (শুক্রবার) সে রকমই দর্শনার্থী হবে।
তবে স্বাভাবিক সময়ে প্রায় দুই হাজার ৫০০ দর্শনার্থী হয়। তিনি নিজেও মনে করেন, ১০০ টাকা প্রবেশ ফি বেশি হয়ে গেছে, ৫০ টাকা হলে দর্শনার্থীদের জন্য ভালো হতো।
দুপুর ১২টার দিকে উদ্যানের পদ্মপুকুর এলাকায় থাকা দুজন জানান, ১০০ টাকা করে প্রবেশ ফি করাটা বেশি হয়ে গেছে। সরকারি প্রতিষ্ঠানে এত বেশি ফি—এটা মানা কষ্টসাধ্য।
দীপা দাস নামের এক দর্শনার্থী বলেন, যেহেতু এটা জাতীয় উদ্যান, এখানে হাজার হাজার গাছ-গাছালি ও পরিবেশের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার জন্য অনেকে আসেন। তবে হঠাৎ প্রবেশ ফি এত বেশি বেড়ে যাওয়ায় অনেকে আগ্রহ হারাবে। মারুফ হোসেন নামের এক দর্শনার্থী বলেন, অতিরিক্ত প্রবেশমূল্য নির্ধারণের কারণে বোটানিক্যাল গার্ডেনে সাধারণ ও নিম্নবিত্ত মানুষের নিয়মিত প্রবেশ করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে।
প্রবেশ ফি কমানোর দাবিতে মানববন্ধন
বোটানিক্যাল গার্ডেনের প্রবেশ ফি হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় অনেকের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। এর অংশ হিসেবে টিকিটের দাম কমানোর দাবিতে মানববন্ধন করেছেন মিরপুর রানার ও ফিটনেস ক্যাম্পিং বাংলাদেশের সদস্যরা।
গতকাল সকালে গার্ডেনের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে এই প্রবেশ ফি কমানোর দাবি জানানো হয়।
মানববন্ধনে আসা ফিটনেস ক্যাম্পেইন বাংলাদেশের সদস্য হীরা চৌধুরী বলেন, ‘আমরা বহুদিন ধরে এখানে রানিং করে আসছিলাম। বর্তমানে গার্ডেনের প্রবেশ ফি পাঁচ গুণ বাড়িয়ে ১০০ টাকা করা হয়েছে। আমরা এখানে নিয়মিত রানিং করতাম, সেখানে কোনো নির্দিষ্ট সময় ছিল না। তবে প্রবেশ ফি নির্ধারণের কারণে আমাদের কার্ডে সকাল ৬টা থেকে ৭টা পর্যন্ত করে দেওয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘কর্তৃপক্ষ যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে এটি অযৌক্তিক। আমরা এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাই। আমরা সুস্থতার প্রজন্ম করতে চাই। আমরা সুস্থ থাকতে চাই।’
প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক শওকত ইমরান আরাফাত বলেন, ‘অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে প্রবেশ ফি বেড়েছে। এখানে ইজারাদার কিংবা বোটানিক্যাল গার্ডেন কর্তৃপক্ষের কোনো হাত নেই। তবে প্রবেশ ফি বাড়ানো নিয়ে দর্শনার্থীদের কিছু অভিযোগ আসছে, এগুলো আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।’
মন্তব্য করুন: