প্রকাশিত:
৪ জুলাই ২০২৩, ২০:২৮
গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই যুবক। পুলিশ জানিয়েছে, এখনও ঘটনার আকস্মিকতা কাটিয়ে উঠতে পারেননি তিনি। হাসপাতালের বিছানা থেকেই বয়ান রেকর্ড করিয়েছেন। দেখা করার জন্য ডেকে পাঠিয়েছিলেন প্রেমিকা। আবদার মেটাতে দামি উপহার নিয়ে দেখা করতে এসেছিলেন প্রেমিকও। কিন্তু সেই উপহার প্রেমিকার হাতে তুলে দিতেই আচমকা চোখে অন্ধকার দেখলেন তিনি। মাথায় ধারালো অস্ত্রের আঘাত করেছে কেউ। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই জ্ঞান হারান প্রেমিক। পর দিন ভোরে তাঁর জ্ঞান ফেরে। যুবক দেখতে পান, সম্পূর্ণ নগ্ন অবস্থায় হাইওয়ের ধারে পড়ে রয়েছেন তিনি।
মহারাষ্ট্রের শাহাপুরের ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, ওই যুবকের নাম বালাজি শিবভগত। শাহাপুরের বাসিন্দা বালাজি পেশায় নির্মাণ ব্যবসায়ী। বছর কয়েক ধরেই শাহাপুরের বাসিন্দা এক যুবতী ভাবিকা ভৈরের সঙ্গে সম্পর্কে ছিলেন তিনি। পুলিশকে বালাজি জানিয়েছেন, ভবিকাই চার জন সঙ্গীকে নিয়ে গত ২৮ জুন চড়াও হন তাঁর উপর।
পুলিশ সূত্রে খবর ভবিকার বয়স ৩০। গত শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪টের সময় বালাজিকে তিনি ডেকে পাঠান শাহাপুরের আটগাঁও হাইওয়ের কাছে একটি জায়গায়। উপহার নিয়ে আসতে বলেন। প্রেমিকার অনুরোধে সোনার কানের দুল, সোনার বালা, সোনার নূপুর, নতুন শাড়ি, নতুন বর্ষার জুতো এবং একটি নতুন ছাতা কিনে সেখানে হাজির হন বালাজি। তার পরেই ঘটনার শুরু।
বালাজি এখন গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পুলিশ জানিয়েছে, এখনও ঘটনার আকস্মিকতা কাটিয়ে উঠতে পারেননি তিনি। হাসপাতালের বিছানা থেকেই বয়ান রেকর্ড করিয়েছেন। পুলিশকে বালাজি বলেছেন, ‘‘ওর জন্য কী না করেছি! সে দিনও যখন আমায় উপহার নিয়ে আসতে বলল আমি গিয়েছি। এ ভাবে তার প্রতিদান দিল।’’ বালাজি তাঁর বয়ানে জানিয়েছেন, ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই সব উপহার প্রেমিকার হাতে দেওয়ার পর যখন দু’জনে কথা বলছিলেন, তখনই চার যুবক এসে চড়াও হয় তাঁর উপর। বালাজির কথায়, ‘‘আমি আমার গাড়ি নিয়ে ওখানে পৌঁছতেই ও উঠে আসে আমার গাড়িতে। আমার হাত থেকে সমস্ত উপহার নেয়। ঠিক তার পরেই গাড়ির ভিতর উঠে আসে চার যুবক। তারা একপাশে ঠেলে সরিয়ে দেয় আমাকে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই এক জন আমার গাড়িটি চালাতে শুরু করে। আর কেউ এক জন ভারী চপার দিয়ে আঘাত করে আমার মাথায়।’’
পুলিশ জানিয়েছে, এর পর রাতভর একটি অজানা জায়গায় নিয়ে গিয়ে শারীরিক অত্যাচার করা হয় বালাজির উপর। ভোর ৫টা নাগাদ শাহাপুর হাইওয়েতে তাঁকে ফেলে দিয়ে পালিয়ে যায় ভাবিকা এবং তাঁর সঙ্গীরা। তাঁর শরীরে একটি সুতোও ছিল না। তার উপর তাঁর চোখে লঙ্কা গুঁড়ো ঢেলে দিয়ে গিয়েছিল দুষ্কৃতীরা।
পুলিশকে বালাজি জানিয়েছেন, তাঁর দু’টি সোনার চেন, মোবাইল, হাতের ছ’টি আংটি এবং সঙ্গে থাকা নগদ টাকা— সব নিয়ে নিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। ২৯ জুন ভোরে কোনও মতে স্থানীয়দের সাহায্য নিয়ে এক বন্ধুকে ফোন করেন বালাজি। তিনিই পুলিশকে নিয়ে এসে উদ্ধার করেন গুরুতর জখম বালাজিকে।
পুলিশ এই ঘটনায় ভাবিকা-সহ চার জনকে চিহ্নিত করেছে। তবে এখনও কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।
মন্তব্য করুন: