প্রকাশিত:
৩ জুন ২০২৪, ১৭:০৩
২০২২ সালে ইউক্রেনের ওপর হামলার ঠিক আগে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের চীন সফরের সময় দুই দেশ ‘সীমাহীন’ মৈত্রীর অঙ্গীকার করেছিল। ইউক্রেন যুদ্ধের বিষয়ে চীন ‘নিরপেক্ষ’ অবস্থানের দাবি করে আসছে। যুদ্ধের শুরু থেকে পশ্চিমা জগতের নিষেধাজ্ঞায় জর্জরিত রাশিয়ার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য উল্লেখযোগ্য মাত্রায় বাড়ানো সত্ত্বেও চীন সে দেশকে কোনো সামরিক সহায়তা দেয়নি বলে দাবি করছে। অথচ মার্কিন প্রশাসন চীনের বিরুদ্ধে রাশিয়াকে ‘ডুয়াল ইউজ’ বা বেসামরিক ও সামরিক কাজে ব্যবহার করা যায়—এমন সামগ্রী রপ্তানির অভিযোগ এনেছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি এবার পরোক্ষভাবে চীনের বিরুদ্ধে রাশিয়াকে প্রত্যক্ষ মদত দেওয়ার একাধিক অভিযোগ আনলেন। তার মতে, চীনের মদতের কারণেও ইউক্রেন যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হচ্ছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের অভিযোগ, সুইজারল্যান্ডে আসন্ন ইউক্রেন শান্তি সম্মেলন বানচাল করতে রাশিয়াকে সহায়তা করছে চীন। রাশিয়া সম্মেলনে আমন্ত্রণ না পাওয়ায় চীনও সম্মেলনে যোগ না দেওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
সরিসরি নাম না নিয়েও জেলেনস্কি বলেন, অন্যান্য অনেক দেশের ওপর সম্মেলনে অংশ না নেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করছে চীন। সিঙ্গাপুরে ‘শাংরি লা ডায়ালগ’ নামের প্রতিরক্ষাসংক্রান্ত সম্মেলনে সশরীরে যোগ দিয়ে জেলেনস্কি এশিয়ার দেশগুলোর সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করেছেন। রাশিয়ার হামলা মোকাবেলায় তিনি ইউক্রেনের জন্য সামরিক সহায়তারও আবেদন জানান। সুইজারল্যান্ডে ইউক্রেন শান্তি সম্মেলনে শীর্ষ নেতাদের উপস্থিত থাকারও অনুরোধ করেন জেলেনস্কি।
তার মতে, এখনো পর্যন্ত প্রায় ১০০ দেশ ও প্রতিষ্ঠান সম্মেলনে অংশ নেওয়ার অঙ্গীকার করেছে।
চীন জেলেনস্কির অভিযোগ সম্পর্কে সরাসরি মন্তব্য করেনি। তবে সম্মেলনে উপস্থিত চীনা প্রতিরক্ষামন্ত্রী দং জুন তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেননি। ইউক্রেনে শান্তি ফেরাতে চীন নিজস্ব পরিকল্পনা পেশ করলেও এখনো সেই শান্তির পরিবেশ সৃষ্টি হয়নি বলে দাবি করছে। বেইজিংয়ে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং শুক্রবার (৩১ মে) বলেন, আন্তর্জাতিক সমাজ এ ক্ষেত্রে চীনের প্রত্যাশা এখনো পূরণ করেনি।
আগামী ১৫ ও ১৬ জুন সুইজারল্যান্ডের সম্মেলনে ইউক্রেনের প্রধান মদতকারী দেশ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উপস্থিতি নিয়েও সংশয় রয়েছে। নির্বাচনী প্রচারে ব্যস্ত বাইডেন শেষ পর্যন্ত উপস্থিত থাকতে না পারলে সম্মেলনের গুরুত্ব কমে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। জেলেনস্কির মতে, এর ফলে পুতিনের কাছে ভুল বার্তা যাবে। তিনি রবিবার (২ জুন) সিঙ্গাপুরে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে আলোচনা করেন। তিনি সাংবাদিকদের কাছে আলোচনার ফল নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। অস্টিনও ইউক্রেনের জন্য প্রায় ৫০টি দেশের কোয়ালিশনের সহায়তা চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেন।
মন্তব্য করুন: