প্রকাশিত:
৩ জুন ২০২৪, ১৫:৩১
লন্ডন পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হতে চলতি সপ্তাহেই আবেদন করতে পারে অনলাইন ফ্যাশন ফার্ম শিইন।
প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে কোম্পানিটি প্রায় ৬৬ বিলিয়ন ডলার বাজার থেকে তুলতে চায় বলে বিবিসি জানিয়েছে।
শুরুটা চীনে হলেও বর্তমানে শিইনের সদরদপ্তর সিঙ্গাপুরে। যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের বাধা এবং কঠোর নিরীক্ষার মুখে পড়া এ কোম্পানি এখন যুক্তরাজ্যের বাজারে শেয়ার বিক্রির পথে আছে।
বিবিসি লিখেছে, এ বিষয়ে কথা বলতে তারা শিইনের একজন মুখপাত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল, তাবে তিনি মন্তব্য করতে রাজি হননি।
শিইনের বিরুদ্ধে অতীতে জোরপূর্বক কাজ করানোসহ অনৈতিক বাণিজ্য চর্চার অভিযোগ আছে।
লন্ডন স্টক মার্কেটে তালিকাভুক্ত হওয়ার জন্য যুক্তরাজ্যের আর্থিক নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ ফিন্যান্সিয়াল কন্ডাক্ট অথরিটির কাছে কাগজপত্র জমা দিতে হয়। চলতি সপ্তাহেই সেসব নথি জমা দেওয়া হতে পারে। স্কাই নিউজ বলছে, জুনের শেষার্ধে বিষয়টি এগোতে পারে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সে জানুয়ারিতে প্রকাশিত প্রতিবেদন বলেছিল, নিউ ইয়র্কে তালিকাভুক্ত হওয়ার জন্য সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে কাগজপত্র জমা দিয়েছিল শিইন।
তবে ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের মধ্যে তীব্র উত্তেজনার মধ্যে চীনা কোম্পানির তকমা দিয়ে শিইনকে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া করার দাবি তুলেছিলেন আইনপ্রণেতারা।
এ কোম্পানি পোশাক তৈরির জন্য চীনের উইঘুরের বাসিন্দাদের জোরপূর্বক শ্রম দিতে বাধ্য করে অভিযোগ এনে যুক্তরাষ্ট্রের একদল আইনপ্রণেতা গতবছর তদন্তের দাবি তোলেন।
তখন শিইন বিবিসিকে বলেছিল, “জোরপূর্বক শ্রমের বিষয়ে আমরা শূন্য সহিষ্ণুতা নীতি অনুসরণ করি।”
লন্ডন পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির গুঞ্জনের মধ্যেই শিইনকে যুক্তরাষ্ট্রের বাইরেও তদন্তের মুখে পড়তে হয়েছে।
গত মাসে এক প্রতিবেদনে বলা হয়, শিইন পরিস্থিতির উন্নতির আশ্বাস দিলেও এখনো তাদের কিছু পোশাক সরবরাহকারী সপ্তাহে ৭৫ ঘণ্টা কাজ করাচ্ছে।
২০২১ সালের প্রতিবেদনের ধারাবাহিকতায় নতুন তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সুইজারল্যান্ডের অধিকার সংগঠন পাবলিক আই। তারা চীনের শিল্পকেন্দ্র কুয়াংচৌতে শিইনের সরবরাহকারীদের ছয়টি কারখানা পেয়েছেন, যেখানে একদল কর্মী মাত্রারিক্ত কর্মঘণ্টার কথা জানিয়েছেন।
পাবলিক আইয়ের ভাষ্য অনুযায়ী, তারা ওই ছয় কারখানার ১৩ জন কর্মীর সঙ্গে কথা বলে জেনেছেন, অনেক কর্মীই মাত্রারিক্ত সময় ধরে কাজ করছেন।
শিইন বিবিসিকে বলেছে, পাবলিকের আইয় যেসব অভিযোগ তুলেছে, সেসব গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে তারা। ইতোমধ্যে পরিস্থিতির ‘অর্থবহ’ উন্নয়ন হয়েছে।
২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর থেকেই শিইন দ্রুত বাজার ধরছে এবং কোভিড মহামারীর সময় অনেক কোম্পানির মত তাদের উল্লম্ফন ঘটেছে।
সস্তা দামে পোশাক বিক্রি করা এ কোম্পানি ইনস্টাগ্রাম, টিকটকসহ অন্যান্য সোশাল মিডিয়ায় প্রচার চালিয়ে বিশ্বের অন্যতম বড় খুচরা বিক্রেতায় পরিণত হয়েছে।
শিইনের একসময়ের সদরদপ্তর কুয়াংচৌর আশেপাশে সহস্র সরবরাহকারী আছে। নতুন পণ্য উৎপাদনে যেখানে কয়েক মাস লেগে যায়, সেখানে চুক্তিবদ্ধ এসব উৎপাদক কোম্পানি কয়েক সপ্তাহেই তা বানিয়ে দিতে পারে।
মন্তব্য করুন: