প্রকাশিত:
৪ জুলাই ২০২৩, ১৭:৪১
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, সরকারি হাসপাতালগুলো সরেজমিন পরিদর্শন করে দেখা গেছে, প্রত্যেক রোগীর সঙ্গে তিন থেকে পাঁচজন করে ভিজিটর দিনে, এমনকি রাতেও হাসপাতালে অবস্থান করেন। এতে হাসপাতালে মূল রোগীদের সেবা পাওয়া বিঘ্নিত হয়।
তিনি বলেন, এর মানে হলো, হাসপাতালের নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মচারী ও নার্সদের ঠিকভাবে কাজে লাগানো হচ্ছে না। এজন্যই রোগীরা সঙ্গে করে একাধিক অ্যাটেন্ডেন্টস আনছেন ও রাখছেন। সরকারি হাসপাতালে সাধারণ মানুষ কাঙ্ক্ষিত সরকারি সেবা পাবে না, তা চলতে পারে না। হাসপাতালে যার যা ডিউটি, তাকে সেটিই করতে হবে। তা না হলে নির্দিষ্ট হাসপাতালের দায়িত্বশীলদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সোমবার (৩ জুলাই) রাজধানীর মহাখালীতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে দেশের সব জেলার সিভিল সার্জন ও হাসপাতাল তত্ত্বাবধায়কদের সঙ্গে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনাবিষয়ক একটি বিশেষ কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
কর্মশালায় উপস্থিত জেলার সিভিল সার্জনস, হাসপাতাল তত্ত্বাবধায়ক ও বিভাগীয় পর্যায়ের স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের উদ্দেশে জাহিদ মালেক বলেন, দেশের সব সরকারি হাসপাতালের নার্সদের ঠিকভাবে কাজে লাগাতে হবে। সরকারি হাসপাতালে কর্মরত কর্মচারীদের নিজ নিজ কাজে অবহেলার জন্যই হাসপাতাল পরিপূর্ণ পরিচ্ছন্ন হচ্ছে না, রোগীদের সঙ্গে থাকা লোকেদের ভিড় থামানো যাচ্ছে না, দালালদের দৌরাত্ম্য কমানো যাচ্ছে না। ফলে, হাসপাতালের সেবার মানও কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে নেওয়া যাচ্ছে না।
দেশের সব সরকারি হাসপাতালে সেবামূলক কাজের মান আরও কীভাবে বাড়ানো যায়, কীভাবে হাসপাতালগুলো মানসম্পন্ন ও পরিচ্ছন্ন রাখা যায়, কর্মচারী ও নার্সদের ডিউটি বাড়িয়ে দিয়ে কীভাবে রোগীর সঙ্গে অতিরিক্ত ভিজিটর কমানো যায়, নার্স ও চিকিৎসকদের চলমান ডিউটি কতটা কার্যকর হচ্ছে, ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ করণীয় বিষয় তুলে ধরে কর্মশালায় উপস্থিত এবং জুম লাইভে যুক্ত কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
দেশের মানুষের সেবার মান বাড়ানোর গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, প্রতিদিন সারাদেশে অন্তত ১০ লাখ সাধারণ মানুষ সরকারি হাসপাতালে সেবা নিতে আসে। ১০ লাখ মানুষকে সেবা দিতে সরকারি হাসপাতালও করা হয়েছে জেলা শহর থেকে একেবারে ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত। লোকবলে আমাদের ঘাটতি আছে ঠিকই, তবে আমাদের যতটুকু সম্পদ আছে সেটি দিয়েই দেশের মানুষকে চিকিৎসা সেবা দিতে হবে। এজন্যই যারা যারা হাসপাতালে কর্মরত আছে তাদেরকে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে হবে।
মন্ত্রী বলেন, দেশের মানুষ সরকারি স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে প্রশংসার পাশাপাশি অভিযোগও নিয়মিতই করছে। এই অভিযোগগুলো সব সত্যি না হলেও কিছু তো সত্যি। সরকারি সেবা পাওয়ার ঘাটতি নিয়ে মানুষের অভিযোগগুলোতে আমাদের গুরুত্ব দিতে হবে। সরকারি হাসপাতালগুলোকে পরিচ্ছন্ন রাখার পাশাপাশি দেশের সব সরকারি হাসপাতালে স্বাস্থ্যসেবামূলক কাজের মান বাড়াতেই হবে। স্বাস্থ্য খাতে বাজেট যতটুকুই বাড়ুক, বাড়ানো হয়েছে। দেশের সাধারণ মানুষ সঠিক সেবা পাবে বলেই আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও স্বাস্থ্য খাতের দিকে বিশেষ মনোযোগ দিয়েছেন। মানুষের জন্য স্বাস্থ্যসেবায় অবহেলা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না।
কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ বি এম খুরশীদ আলম, অতিরিক্ত সচিব (হাসপাতাল) নাজমুল হক খান, অতিরিক্ত মহাপরিচালক প্রশাসন, অতিরিক্ত মহাপরিচালকসহ (পরিকল্পনা) বিভিন্ন জেলা থেকে আসা সিভিল সার্জন্স ও হাসপাতাল তত্ত্বাবধায়করা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন: