প্রকাশিত:
২৮ মে ২০২৪, ১১:৪৪
দুই দফায় জালে বল পাঠিয়েও গোল হলো না। দুবারই অফসাইড! তবে সেই হতাশা পেছনে ফেলে বৈধ গোলও ঠিকই আদায় করে নিলেন ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো। দুটি গোল করে দুটি রেকর্ডে নিজের নাম লেখালেন ৩৯ বছর বয়সী মহাতারকা। সৌদি ফুটবলে ইতিহাস গড়ার পাশাপাশি দারুণ কীর্তি গড়লেন বৈশ্বিক ফুটবলেও।
সৌদি প্রো লিগের এবারের মৌসুমের শেষ দিনে সোমবার (২৭ মে) আল ইত্তিহাদকে ৪-২ গোলে হারায় আল নাস্র। দুই অর্ধে দুটি গোল করেন রোনালদো।
লিগের সর্বোচ্চ গোলস্কোরার হওয়াটা আগেই নিশ্চিত করেছিলেন রোনালদো। শেষ ম্যাচের দুই গোলে ছাড়িয়ে গেলেন সৌদি লিগের ইতিহাসে সবাইকে। ৩৫ গোল হলো এবার তার। এই লিগের ৪৮ বছরের ইতিহাসে এক মৌসুমে সবচেয়ে বেশি গোলের রেকর্ড পর্তুগিজ নায়কের।
আল নাস্রের হয়েই ২০১৮-১৯ মৌসুমে ৩৪ গোল করে আগের রেকর্ডটি গড়েছিলেন মরক্কোর ফরোয়ার্ড আব্দেররাজ্জাক হামাদাল্লাহ। লিগে নিজের প্রথম পূর্নাঙ্গ মৌসুমেই সেই রেকর্ড ছাড়িয়ে গেলেন রোনালদো। গত মৌসুমে তিনি এই লিগে পা রেখেছিলেন মৌসুমের মাঝামাঝি।
এবার ৩১ ম্যাচে ৩৫ গোল করার পাশাপাশি অ্যাসিস্ট করেছেন ১১ গোলে। হ্যাটট্রিক করেছেন তিনি চারটি।
একইসঙ্গে আরেকটি অনন্য কীর্তিও গড়া হয়ে গেল তার। ভিন্ন চারটি লিগের সর্বোচ্চ গোলস্কোরার হওয়া প্রথম ফুটবলার তিনিই। ইউরোপের তিন শীর্ষ লিগ, ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ, লা লিগা ও সিরি আ হয়ে সৌদি প্রো লিগেও তিনি গোলের তালিকায় নিজেকে সবার ওপরে রাখলেন।
আল ইত্তিহাদের বিপক্ষে এ দিন দুইবার অফসাইডে থেকে গোল ও কয়েকটি সুযোগ হাতছাড়া করার পর প্রথমার্ধের শেষদিকে দলকে এগিয়ে দেন রোনালদো। মোহাম্মেদ আল-ফাতিলের লম্বা পাস থেকে বুক দিয়ে বল নামিয়ে বক্সের ভেতরে ঢুকে গড়ানো শটে বল জালে জড়ান তিনি।
৫৭তম মিনিটে বাঁ পাশ থেকেই তার শট একটুর জন্য বাইরে চলে যায়। ৬৬তম মিনিটে সালিম আল-মানহালি লাল কার্ড দেখলে ১০ জনের দলে পরিণত হয় আল ইত্তিহাদ। মিনিট তিনেক পরই দ্বিতীয় গোলটি করেন রোনালদো কর্নার থেকে হেড করে।
প্রথম গোলের পর সেভাবে উদযাপন করেননি তিনি। কিন্তু দ্বিতীয় গোলের পর বাঁধনহারা উদযাপনই বলে দিচ্ছিল, রেকর্ডটি তিনি কতটা চাইছিলেন।
মিনিট পাঁচেক পর তুলে নেওয়া হয় রোনালদোকে। একটু পরই আরও এগিয়ে যায় আল নাস্র। এবার পেনাল্টি থেকে গোল করে আব্দুলরাহমান ঘারিব।
নির্ধারিত সময়ের তখন বাকি আর ১০ মিনিট। কিন্তু খেলার নাটকীয়তার বাকি আরও অনেক! ৮৮তম মিনিটে ও যোগ করা সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে দুটি গোল করে ম্যাচে প্রবল নাটকীয়তায় ফেরায় আল ইত্তিহাদ। শেষ পর্যন্ত অবশ্য ম্যাচে সমতা ফেরাতে পারেনি তারা। বরং যোগ করা আট মিনিটের পঞ্চম মিনিটে মেশারি আল-নেমেরের গোলে পরিষ্কার ব্যবধানেই জেতে আল নাস্র।
রোনালদোর অসাধারণ পারফরম্যান্সের পরও মৌসুমটি আল নাস্রের জন্য ছিল হতাশাজনক। সৌদি প্রো লিগে তারা রানার্স আপ হয়েছে আল হিলালের চেয়ে অনেকটা পেছনে থেকে।
চোটের কারণে গোটা মৌসুমে নেইমারকে না পেলেও ৩৪ ম্যাচে ৯৬ পয়েন্ট নিয়ে লিগ শেষ করে আগেই চ্যাম্পিয়ন হয়ে যাওয়া আল হিলাল। আল নাস্রের পয়েন্ট ৮২। তিনে থাকা আল আহলির পয়েন্ট ৬৫।
এছাড়া সৌদি কাপ ও এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স লিগেও শিরোপা না পেয়ে ট্রফিবিহীন মৌসুম কাটল আল নাস্রের। রোনালদো সামনে ইউরোতে খেলবেন আন্তর্জাতিক ফুটবলে নিজের গোলের রেকর্ড আরও সমৃদ্ধ করতে।
মন্তব্য করুন: