প্রকাশিত:
১২ মে ২০২৪, ১৪:১৬
শরীয়তপুর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের একটি সভায় এক ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ভোটার ও প্রার্থীকে হুমকি দিচ্ছেন, এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
সদরের চন্দ্রপুর ইউপির চেয়ারম্যান আবদুস সালাম খানের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাচনের চেয়ারম্যান প্রার্থী বিল্লাল হোসেন (দিপু) এবং ওই সভায় উপস্থিত ভোটারদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। হুমকি দেওয়ার ৪ মিনিট ২৮ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের রির্টানিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, দ্বিতীয় ধাপে ২১ মে শরীয়তপুর সদর উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। চেয়ারম্যান পদে পাঁচজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে দুজন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে দুজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁরা হলেন চেয়ারম্যান প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুজ্জামান, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক নুরুল আমিন কোতোয়াল, সদর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি বিল্লাল হোসেন ও তাঁর স্ত্রী পেনসি বেগম, আল আমিন খান। ভাইস চেয়ারম্যান পদে সাখাওয়াত হোসেন হাওলাদার ও ইকবাল হোসেন লড়ছেন। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন সামিনা ইয়াসমিন ও ফাতেমা আক্তার।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, গতকাল শনিবার (১১ মে) রাতে চন্দ্রপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য রিপন সরদারের বাড়িতে ঘোড়া প্রতীকের পক্ষে উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেই উঠান বৈঠকে বক্তব্য দেন ইউপি চেয়ারম্যান আবদুস সালাম। তাঁর বক্তব্যে তিনি চেয়ারম্যান প্রার্থী বিল্লাল হোসেনকে হুমকি দেন। ওই সভায় উপস্থিত ভোটারদের উদ্দেশ্য করেও হুমকি দেন। আবদুস সালামের বক্তব্যের ৪ মিনিট ২৮ সেকেন্ডের একটি ভিডিও রাতেই ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
ভোটারদের উদ্দেশ্য করে আবদুস সালাম বলেন, ‘দিপু (বিল্লাল হোসেন) যদি আমাদের চন্দ্রপুর ঢোকে, ওরা যদি চন্দ্রপুরে ভোট চাইতে আসে, ওগো দৌড়াইতে পারুম না? দৌড়াইতে পারবেন না? কালকে দিপুর বউ ভোট চাইতে আইছিল, অগো দৌড়াইয়া দিছে। আজ থেকে ওরা যাতে চন্দ্রপুরে ভোট চাইতে না আইতে পারে। পারবেন? কোনো হুমকি-ধমকি মারবেন না। সামনা-সামনি মারবেন। স্পষ্ট কথা, দুই কূল রক্ষা কইরা চলবেন না। তলে-তলে খাতির রাইখেন না। তলে তলে খাতির রাখলে দিপুর মাইরও খাইবেন, আমাদের মাইরও খাইবেন। চন্দ্রপুর থেকে কাস্টিং ভোটের শতভাগ দিতে চাই।’
অভিযোগের বিষয়ে চন্দ্রপুর ইউপির চেয়ারম্যান আবদুস সালাম বলেন, ‘আমি আমার কর্মী–সমর্থকদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁদের ভোট সম্পর্কে ধারণা দিয়েছি। কাউকে কোনো হুমকি দেইনি। আর দিপু (বিল্লাল হোসেন) নিজেই আমার বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করছেন। আমাকে হুমকি দিচ্ছেন।’
চেয়ারম্যান প্রার্থী বিল্লাল হোসেন বলেন, তাঁকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তিনি রিটার্নিং কর্মকর্তা ও থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। তবে কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না।
সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাইনউদ্দিন বলেন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রচার–প্রচারণার সময় ভোটার এবং কোনো প্রার্থীকে হুমিক দেওয়ার অভিযোগ তাঁরা পাননি। লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবদুল মান্নান বলেন, ‘কোনো প্রার্থী বা ভোটারকে কেউ হুমকি দিলে বা বল প্রয়োগ করলে তা নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখব। এমন অভিযোগের সত্যতা পেলে তাঁর বিরুদ্ধে আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগ এনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মন্তব্য করুন: