প্রকাশিত:
১ এপ্রিল ২০২৪, ১৬:১৬
সিলেটের কালবৈশাখীর সঙ্গে শিলাবৃষ্টিতে গোলাপগঞ্জ উপজেলার অন্তত ৪০ জন আহত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন। তাঁদের প্রত্যেকের মাথায় সেলাই দিতে হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে সাড়ে ১০টার দিকে সিলেটের বিভিন্ন এলাকায় এ শিলাবৃষ্টি হয়। ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে তিনজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেটে পাঠানো হয়েছে।
আজ সোমবার দুপুরে সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সুদর্শন সেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আহত ৪০ জনের প্রত্যেককে সেলাই নিতে হয়েছে মাথায়। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে তিনজনের মাথা ফেটে থেঁতলে গেছে। এ জন্য তাঁদের উন্নত চিকিৎসা ও পরীক্ষা করার জন্য সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
গোলাপগঞ্জের নরুপাড়া গ্রামের বিল্লাল আহমদ পেশায় একজন রিকশাচালক। গতকাল রাতে তাঁকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাঁর মাথা, নাকে ও মুখে শিলাখণ্ডের আঘাত লেগেছে।
বিল্লালের বোন রুমি বেগম বলেন, রিকশা নিয়ে ঘরে ফেরার পর কালবৈশাখী ও শিলাবৃষ্টি শুরু হয়। এ সময় ঘরে বিছানায় শুয়ে ছিলেন বিল্লাল। একপর্যায়ে বড় একটি শিলাখণ্ড টিনের চাল ভেদ করে তাঁর মাথা ও মুখের ওপর পড়ে। প্রথমে বিল্লালকে গোলাপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাঁর সিটি স্ক্যান করাতে হয়েছে।
বারকোট গ্রামের মনাফ মিয়া বলেন, শিলাবৃষ্টি শুরুর সময় তিনি রাস্তায় ছিলেন। একপর্যায়ে শিলার বড় একটি খণ্ড তাঁর মাথায় পড়ে। এতে তিনি রক্তাক্ত জখম হন। এরপর তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে সেলাই দিয়েছেন।
স্থানীয় লোকজন বলেন, গতকাল রাত সাড়ে ১০টার দিকে সিলেট জুড়ে আঘাত হানে কালবৈশাখী। অন্তত ১৫ মিনিট শিলাবৃষ্টি হয়েছে। এ সময় বড় বড় শিলাখণ্ড দেখে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে মানুষের মধ্যে। শিলাবৃষ্টিতে সিলেটের বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অনেকের টিনের ছাদ ছিদ্র হয়ে গেছে। বাসাবাড়ির জানালার কাঁচ, যানবাহনের ক্ষয়ক্ষতি হয়।
নগরের উপরপাড়া এলাকার বাসিন্দা বকুল দাশ বলেন, শিলাবৃষ্টিতে তাঁর টিনের চালার ঘর ছিদ্র হয়ে গেছে। সবজি বিক্রি করে তিনি সংসার চালান। টানাটানির মধ্যে এখন তাঁর প্রায় সব কটি চালা বদল করতে হবে। আপাতত পলিথিন দিয়ে ঢেকে কোনোভাবে রাত কাটিয়েছেন।
একই এলাকার বাসিন্দা মায়া রানী দাশ বলেন, তাঁর বাড়িরও টিনের চালা নষ্ট হয়ে গেছে। এক ছেলে এক মেয়েকে নিয়ে গতকাল খাটের নিচে রাত কাটিয়েছেন।
শিলাবৃষ্টির ফলে ফসলের আংশিক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সিলেটের উপপরিচালক মোহাম্মদ খয়ের উদ্দিন মোল্লা। তিনি বলে শিলাবৃষ্টিতে কৃষকের কিছু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অন্যদিকে লাভও হয়েছে। যে জমিগুলোতে পানির সংকট ছিল সেচের ব্যবস্থা ছিল না, সেগুলোতে পানি হয়েছে। এতে ভালো ফসল হওয়ার সম্ভাবনা হয়েছে। সবজিসহ কিছু ফসল নষ্ট হয়েছে, সেটির পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়নি। তবে সবজির শেষ মৌসুম হওয়ায় আহরণ শেষ পর্যায়ে। এতে ক্ষতি কম হয়েছে।
মন্তব্য করুন: