প্রকাশিত:
২৭ মার্চ ২০২৪, ১৩:৪৪
দেশের স্বার্থে ভেবেচিন্তে ভোট দেওয়ার আবেদন জানিয়ে অনশন ভাঙলেন বাস্তবের ‘র্যাঞ্চো’ ভারতের লাদাখের শিক্ষাবিদ ও পরিবেশ আন্দোলনকর্মী সোনম ওয়াংচুক। কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলকে দেওয়া যাবতীয় প্রতিশ্রুতি আদায়ের দাবিতে টানা ২১ দিন হাড়হিম ঠান্ডা উপেক্ষা করে লাদাখের রাজধানী লেহতে খোলা আকাশের নিচে কাটিয়ে দিলেন তিনি।
অনশন ভেঙে ওয়াংচুক বলেন, আন্দোলন তিনি চালিয়ে যাবেন; লড়াইও। প্রতিশ্রুতি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত থামবেন না।
লাদাখবাসীর উদ্দেশে এই শিক্ষাবিদ বলেন, পাঁচ বছর আগে ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। একটিও পূরণ করা হয়নি। আবার লোকসভার ভোট আসছে। লাদাখের জনগণ যেন ভেবেচিন্তে বিবেচনা করে ভোট দেন।
আমির খানের সিনেমা ‘থ্রি ইডিয়টস’-এর কেন্দ্রীয় চরিত্র ছিল ‘ফুংসুখ ওয়াংডু’। ডাক নাম ‘র্যাঞ্চো’। সিনেমার সেই চরিত্রই বাস্তবের সোনম ওয়াংচুক। ম্যাগসাইসাই পুরস্কার পাওয়া এই শিক্ষাবিদ ও পরিবেশকর্মী দুটি দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছেন। লাদাখকে দেওয়া কেন্দ্রীয় সরকারের সব প্রতিশ্রুতি আদায় এবং বৃহৎ শিল্পপতিদের কবল থেকে লাদাখের পরিবেশ রক্ষা।
জম্মু-কাশ্মীর থেকে লাদাখকে বিচ্ছিন্ন করে দুটি পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল তৈরি করা হয়েছিল ২০১৯ সালের ৫ আগস্ট। সেদিনই বাতিল করা হয়েছিল সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ।
সোনম ওয়াংচুকের দাবি, তখনই প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, লাদাখকে সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলভুক্ত করা হবে। পাঁচ বছর পর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ লেহ ও কারগিলের প্রতিনিধিদের জানিয়ে দেন, ষষ্ঠ তফসিলের আওতায় লাদাখকে আনা হবে না।
সোনম ওয়াংচুকের অনশনে হাজার হাজার লাদাখবাসী যোগ দিয়ে সেই দাবিই জোরালো করে তুলেছেন।
অনশন ভাঙার সময় গতকাল মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে সোনম ওয়াংচুক একটি বার্তাও দেন। তিনি বলেন, মোদি তো রামভক্ত। তাঁর মনে রাখা উচিত, তুলসীদাসের ‘রামচরিত মানস’–এ লেখা আছে ‘প্রাণ যায়ে পর বচন না যায়’, অর্থাৎ প্রাণ গেলেও প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা উচিত। মোদির তা মনে রাখা দরকার।
ওয়াংচুক বলেন, মোদি-শাহকে রাজনৈতিক নেতা থেকে রাষ্ট্রনেতায় উন্নীত হতে হবে। সে জন্য দূরদৃষ্টিসম্পন্ন ও দৃঢ়চেতা হতে হবে।
লাদাখের পরিবেশ রক্ষা করতে ও তাঁদের জমি চীন কতটা জবরদখল করে রেখেছে, তা দেখতে সোনম ওয়াংচুক ইতিমধ্যেই প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় মিছিল করে যাওয়ার কর্মসূচির কথা জানিয়েছেন। এখন দেখার, সেই অভিযানের অনুমতি কেন্দ্রীয় সরকার দেয় কি না।
পূর্ব লাদাখের গালওয়ানসহ অগ্রবর্তী এলাকায় সংসদ সদস্যদেরও যাওয়ার অনুমতি দেয়নি মোদি সরকার। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় পরামর্শদাতা কমিটির বৈঠকে বিরোধী সদস্যরা সেই দাবি জানালেও সরকার তা মেনে নেয়নি।
মন্তব্য করুন: