শনিবার, ২৩শে নভেম্বর ২০২৪, ৮ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | ই-পেপার
ব্রেকিং নিউজ:
  • সারাদেশে জেলা ও উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আগ্রহী হলে আপনার সিভি ই-মেইল করতে পারেন। ই-মেইল daajkaal@gmail.com
সংবাদ শিরোনাম:
  • ঢাকায় আসছেন যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমবিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি কেলি রদ্রিগেজ
  • প্রথমবার সচিবালয়ে যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা
  • এস আলমের ঋণ জালিয়াতি, কেন্দ্রিয় ব্যাংকের ১৩ জনকে তলব
  • সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা
  • ড. ইউনূসের ভিশনের দিকে তাকিয়ে যুক্তরাজ্য: ক্যাথরিন ওয়েস্ট
  • ২০২৫ সালে সরকারি নির্মাণে পোড়া ইট ব্যবহার বন্ধ হবে
  • নাম ও পোশাক বদলাচ্ছে র‌্যাব
  • গণহত্যা মামলায় ৮ পুলিশ কর্মকর্তাকে গ্রেফতারের নির্দেশ
  • আজারবাইজানের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন প্রধান উপদেষ্টা
  • পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনতে সিঙ্গাপুরের সহায়তা চান প্রধান উপদেষ্টা

দেশজুড়ে হাজার হাজার স্ক্র্যাপযোগ্য যানবাহন

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত:
২৪ জুন ২০২৩, ২২:০২

দেশজুড়ে হাজার হাজার স্ক্র্যাপযোগ্য যানবাহন রয়েছে। বিআরটিএর হিসাবে বর্তমানে ধ্বংসযোগ্য অবস্থায় রয়েছে সড়কে চলাচল করা ৪০.৬৬ শতাংশ বাস। অতি পুরনো ও চলাচলের অনুপযোগী গাড়িগুলোই সড়কে বেশির ভাগ দুর্ঘটনার জন্য দায়ী। তবে প্রতিবছর চলাচলের অনুপযোগী গাড়িগুলোর জন্য সড়কে কী পরিমাণ দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটে তার যথাযথ কোনো পরিসংখ্যান নেই। এমন পরিস্থিতিতে দেশের সড়কগুলোতে চলাচল অনুপযোগী, অচল ঘোষিত বা মেয়াদ শেষ হওয়া মোটরযান বিনষ্ট করে ফেলতে একটি নীতিমালার খসড়া চূড়ান্ত করেছে সরকার। নীতিমালা পাস হলে আনফিট বা অচল গাড়ি স্ক্র্যাপ করা যাবে।

অর্থাৎ পুনর্ব্যবহারযোগ্য যন্ত্রাংশ আলাদা করে মোটরযানটি ধ্বংস করা যাবে। এর মাধ্যমে সড়কে দুর্ঘটনা ও যানবাহনের দূষণ কমানো সম্ভব হবে।সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের অধীন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ থেকে এই খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, দেশে স্ক্র্যাপযোগ্য গাড়ির সংখ্যা ইতোমধ্যে বিআরটিএ নির্ধারণ করেছে। সংস্থাটির হিসাবে সারা দেশে স্ক্র্যাপযোগ্য বাস ও মিনিবাসের সংখ্যা ৩৩ হাজার ১৭৪টি। অথচ সর্বশেষ গত মে মাস পর্যন্ত দেশে নিবন্ধিত বাস রয়েছে ৫৩ হাজার ৪৮৫টি।

মিনিবাস রয়েছে ২৮ হাজার ৮৮টি। বাস-মিনিবাস মিলিয়ে মোট গাড়ির সংখ্যা দাঁড়াচ্ছে ৮১ হাজার ৫৭৩টি। এর বিপরীতে ৪০.৬৬ শতাংশ গাড়িই ধ্বংসযোগ্য অবস্থায় রয়েছে। আইনে গণপরিবহনের পাশাপাশি পণ্য পরিবহনের অচল গাড়িগুলোও বাধ্যতামূলক স্ক্র্যাপ করা হচ্ছে। বর্তমানে সারা দেশে নিবন্ধিত ট্রাকের সংখ্যা এক লাখ ৪৯ হাজার ৪৪৪। কাভার্ড ভ্যান রয়েছে ৪৫ হাজার ১৫৯টি। মোট এক লাখ ৯৪ হাজার ৬০৩টি পণ্যবাহী গাড়ির মধ্যে স্ক্র্যাপযোগ্য ৩০ হাজার ৬২৩টি, যা ১৫.৭৩ শতাংশ। বিআরটিএর নিবন্ধিত মোটরযানের তালিকা অনুযায়ী গত মে পর্যন্ত দেশে মোটরযান রয়েছে ৫৭ লাখ ৪১ হাজার ৮৬৩টি। ২০১০ সাল থেকে গত মাস পর্যন্ত সময়ে নিবন্ধন পেয়েছে ৪৩ লাখ ১৪ হাজার ৪৯৫টি মোটরযান। বাকি ১৪ লাখ ২৭ হাজার ৩৬৮টি মোটরযান এর আগে নিবন্ধন পেয়েছে। স্ক্র্যাপ নীতিমালা বাস্তবায়ন করতে বিআরটিএ পরিবহন মালিক সমিতির নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছে।

আসন্ন ঈদুল আজহার পর অচল গাড়ি স্ক্র্যাপ করার উদ্যোগ নিতে পরিবহন মালিকদের আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দেবে বিআরটিএ। সূত্র জানায়, বাণিজ্যিক মোটরযানের মেয়াদ নির্ধারণ করে সম্প্রতি একটি প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করেছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের বিআরটিএ শাখা। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, বাস ও মিনিবাসের চলাচলের মেয়াদ ২০ বছর এবং ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যানের মেয়াদ ২৫ বছর নির্ধারণ করা হয়েছে। নীতিমালায় বলা হয়েছে, কোনো যানের মেয়াদ শেষ হলে ওই যান স্ক্র্যাপ করতে হবে। স্ক্র্যাপ করার মতো গাড়ি থাকতে ওই যানের মালিক অন্য কোনো যানের নিবন্ধন পাবেন না। আর স্ক্র্যাপ করার পুরো প্রক্রিয়াটি বিআরটিএর তত্ত্বাবধানে বেসরকারি পর্যায়ে হবে। স্ক্র্যাপযোগ্য মোটরযানের মালিক মূল কাগজপত্রসহ নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করবেন। কর্তৃপক্ষ যাচাই-বাছাই শেষে সংশ্লিষ্ট মোটরযান স্ক্র্যাপ ভেন্ডরের কাছে হস্তান্তর করবে। নিয়োগ দেয়া স্ক্র্যাপ ভেন্ডর কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধির উপস্থিতিতে স্ক্র্যাপ কার্যক্রম পরিচালনা করবে। তবে পরিত্যক্ত মোটরযানের ক্ষেত্রে আদালত, পুলিশ, কাস্টমস বা অন্য যেকোনো সংস্থা যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে স্ক্র্যাপ করার জন্য অনুরোধ করলে বিআরটিএ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। পুলিশের কাছে আটক করা স্ক্র্যাপযোগ্য মোটরযান বিআরটিএ নিজ উদ্যোগেই স্ক্র্যাপ করতে পারবে।

মোটরযানের চেসিস ও বডি এমনভাবে বিনষ্ট করতে হবে, যাতে এগুলো অন্য কোনো মোটরযানে ব্যবহার করা না যায়। সূত্র আরো জানায়, বিআরটিএ উন্মুক্ত বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে প্রতি জেলায় নির্ধারিত সময়ের জন্য এক বা একাধিক স্ক্র্যাপ ভেন্ডর নিয়োগ করবে। তবে স্ক্র্যাপ ভেন্ডর ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান নিবন্ধিত হতে হবে। সে ক্ষেত্রে স্ক্র্যাপ ভেন্ডরের প্রয়োজনীয়সংখ্যক আধুনিক সরঞ্জাম থাকতে হবে। যেমন- গ্যাস কাটার, ক্রেন, শ্রেডার মেশিন, রেকার, হাইড্রলিক প্রেস মেশিনসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি। এদিকে এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি মসিউর রহমান রাঙ্গা জানান, একেবারে আনফিট বাস স্ক্র্যাপ করার সিদ্ধান্ত খারাপ না। তবে এই পদক্ষেপ শুধু গণ ও পণ্য পরিবহনে সীমাবদ্ধ না রেখে ব্যক্তি মালিকাধীন গাড়ির ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হওয়া উচিত।

অন্যদিকে পরিবহন বিশেষজ্ঞদের মতে, শুধু নিবন্ধনের সময় ধরে একটি গাড়িকে চলাচল অনুপযোগী ঘোষণা করা ঠিক হবে না। কম বছরেও গাড়িটি বেশি সময় চলতে পারে। এতে গাড়ির অবস্থা দ্রুত খারাপ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই সঙ্গে মাইলেজ নির্ধারণ করা যেতে পারে। আর গাড়ির অবস্থা কেমন সেটিও বিবেচনা করা যেতে পারে। এ প্রসঙ্গে বিআরটিএর চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার জানান, এখন যেসব গাড়ি আনফিট রয়েছে, সেসব গাড়ি নতুন করে ফিটনেস সনদ পাবে না। পরিবহন মালিকদের এসব গাড়ি সড়কে না নামানোর জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ঈদের পর নীতিমালা চূড়ান্ত হলে আনুষ্ঠানিক পদক্ষেপ নেয়া হবে। আশা করা যায় দ্রুতই নীতিমালার বাস্তবায়ন হবে।


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর