প্রকাশিত:
১৯ মার্চ ২০২৪, ১৩:১২
কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের উখিয়ার ছেপটখালী সৈকত থেকে বুকে ‘চিপট্যাগ’ (শনাক্তকরণ যন্ত্র) নিয়ে সাগরে নেমে গেল অলিভ রিডলে প্রজাতির দুটি মা কাছিম। চিপট্যাগ লাগানোর উদ্দেশ্য, আগামী বছর প্রজনন মৌসুমে এই কাছিম দুটি একই সৈকতে ডিম পাড়তে আসে কি না এবং প্রতিবছর কী পরিমাণ কাছিম সৈকতে ডিম পাড়তে আসে তার তথ্য সংগ্রহ করা।
১৮ মার্চ সোমবার বিকেলে কাছিম দুটির বুকে ‘চিপট্যাগ’ স্থাপন করে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা নেচার অ্যান্ড লাইফ প্রকল্প (কোডেক)। প্রতিষ্ঠানটির প্রকল্প পরিচালক শীতল কুমার নাথ বলেন, অলিভ রিডলে প্রজাতির এই কাছিম দুটি উখিয়ার ছেপটখালী সৈকতে ডিম পাড়তে এসেছিল গত শনিবার। বালুচরে ডিম পেড়ে সমুদ্রে ফিরে যাওয়ার সময় স্বেচ্ছাসেবীরা কাছিম দুটি ধরে বুকে ‘চিপট্যাগ’ লাগিয়ে সাগরে ছেড়ে দেন। ‘চিপট্যাগ’ লাগানোর মাধ্যমে তাদের জীবনাচার বিষয়ে জানার চেষ্টা করা হবে।
কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের মনখালী বিট কর্মকর্তা শিমিল কান্তি নাথ বলেন, প্রতিবছর শীত মৌসুমে সৈকতে ডিম পাড়তে আসে মা কাছিম। বালুচর থেকে ডিম সংগ্রহ করে হ্যাচারিতে সংরক্ষণ করা হয়। ডিম থেকে বাচ্চা ফোটানোর পর তাদের আবার সমুদ্রে অবমুক্ত করা হয়। চলতি মৌসুমে (ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি) কোডেক স্বেচ্ছাসেবীরা সৈকত থেকে ১২০টি মা কাছিমের পাড়া ১৩ হাজার ৪৩৪ ডিম সংগ্রহ করে পাঁচটি হ্যাচারিতে সংরক্ষণ করেন। এর মধ্যে একটি হ্যাচারিতে ফোটা ৩৪টি বাচ্চা গতকাল সোমবার বিকেলে সাগরে অবমুক্ত করা হয়েছে।
এর আগের তিন বছরে কোডেক স্বেচ্ছাসেবীরা ১২৬টি মা কাছিমের পাড়া ১৩ হাজার ৫৩০টি ডিম সংরক্ষণ করেন। তা থেকে বাচ্চা ফোটানো হয় ৮ হাজার ৬৭৮টি, যা পরে সাগরে অবমুক্ত করা হয়।
২০১০ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত তিন দফায় তিনটি মা কাছিমের পিঠে স্যাটেলাইট যন্ত্র বসিয়ে সাগরে অবমুক্ত করা হয়েছিল। কাছিমগুলোর নাম রাখা হয়েছিল ঊর্মি, বাসন্তী ও সাগরকন্যা। যন্ত্র নিয়ে দীর্ঘ সময় গভীর সমুদ্রে ঘুরে বেড়িয়েছিল কাছিম তিনটি। সামুদ্রিক কাছিমের গতিবিধি, বৈচিত্র্যময় জীবনযাপন এবং সমুদ্রের অজানা তথ্য অনুসন্ধানের জন্য বেসরকারি গবেষণা সংস্থা মেরিন লাইফ অ্যালায়েন্স আধুনিক প্রযুক্তির স্যাটেলাইট ট্র্যাকিং শুরু করেছিল। পরবর্তী সময়ে ঘূর্ণিঝড়সহ নানা কারণে কাছিম তিনটি নাই হয়ে যায়।
মন্তব্য করুন: