প্রকাশিত:
১৯ মার্চ ২০২৪, ১১:৫১
আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে এ দেশে গরিবের পেটে ভাত থাকে। গরিবের মাথা গোজার ঠাঁই হয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের দেশে একটি মানুষও ঠিকানাবিহীন থাকবে না, গৃহহীন থাকবে না। আমরা সেটাই বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। এটাই ওরা সহ্য করতে পারে না। সাধারণ মানুষ, গরিব মানুষ ভালো থাকবে, এটা তাদের পছন্দ হয় না। ফলে তারা যেটা চায়, সেটা ইলেকশনের জন্য নয়, বাংলাদেশকে আবার অন্ধকার যুগে ঠেলে দেওয়ার জন্য। কিন্তু এ দেশকে আর কেউ অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিতে পারবে না। এটা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের দেশ। মুজিব জন্মগ্রহণ করেছিলেন এ দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য। তার আদর্শ নিয়েই আমরা সেই পরিবর্তন আনব।
১৮ মার্চ সোমবার তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ ভবনে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষ্যে এ সভার আয়োজন করে আওয়ামী লীগ।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, বিএনপি ডাল-ভাতের ওয়াদা করে ব্যর্থ হয়েছিল। এরপর একজন এসে আলু খেতে বলল, ভাতের পরিবর্তে আলু, আলু উৎপাদনও সেভাবে করতে পারেনি। আওয়ামী লীগের আমলে অন্তত ভাতের কষ্ট নেই। এটা আমরা বলতে পারি। এখন জিনিসের দাম নিয়ে মানুষ বলছে, মুরগির দাম বাড়ল কেন, পেঁয়াজের দাম বাড়ল কেন, চিনির দাম বাড়ল কেন, তেলের দাম বাড়ল কেন? এক সময় দেশের মানুষ নুন-ভাতের কথা চিন্তা করত। সেটুকু জোগাড় করতে পারত না। এখন সেই অবস্থা থেকে আওয়ামী লীগ পরিবর্তন করতে পেরেছে। ভাত না, ডাল-ভাত না, মাছ, মাংস, মুরগি-পেঁয়াজ সেই জায়গায় চলে এসেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে জীবন দেওয়া শহিদের রক্ত বৃথা যেতে পারে না। তিনি বলেন, যে আদর্শ, চেতনা নিয়ে এই দেশ স্বাধীন করেছিলেন আমার বাবা, দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাবেন, ভাগ্য পরিবর্তন করবেন, জীবনমান উন্নয়ন করবেন-সেই আকাঙ্ক্ষা, আদর্শ তো ব্যর্থ হতে পারে না। সেজন্য সব কষ্ট, শোক বুকে নিয়েও আজ মানুষের পাশে আছি, মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করার জন্য।
বিরোধীদের প্রতি ইঙ্গিত করে শেখ হাসিনা বলেন, যারা প্রতিনিয়ত বলে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে হটাবে, উৎখাত করবে, নির্বাচন হতে দেবে না, মানুষ খুন করে, অগ্নিসন্ত্রাস করে, এখন তারা কিন্তু কোনো মানুষকে ইফতার দেয় না, নিজেরা ইফতার পার্টি খায়। ইফতার পার্টিতে গিয়েও আল্লাহ-রাসুলের নাম না নিয়ে আওয়ামী লীগের গীবত গায়। আর কবে আওয়ামী লীগকে উৎখাত করবে সেটাই দেখে। তিনি বলেন, নির্বাচন ঠেকাবে, ঠেকাতে পারেনি, জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিয়েছে। ওদের ভোটের চেহারার কথা তো আমাদের মনে আছে। আমরা সাধারণ মানুষকে ইফতার বিলি করি আর তোমরা ইফতার খাও। তোমরা খেতে জানো। তোমরা হচ্ছ খাই খাই। আর আওয়ামী লীগ দেয় দেয়। এটাই হচ্ছে তফাত।
বিএনপিকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, জাতির পিতাকে হত্যার পর নিজেই (জিয়াউর রহমান) নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করে ক্ষমতায় বসে। এটা কোনো গণতন্ত্রের মধ্য দিয়ে হয়নি। অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের হাত দিয়ে হয়েছে। তারা গণতন্ত্রের ভাষা বোঝে? গণতন্ত্রের অর্থ বোঝে? গণতন্ত্র বানান করতে পারে কিনা সেটাই আমার প্রশ্ন। তারা তোতা পাখির মতো বলে যাচ্ছে গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করে। এ দেশের গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিয়েছে আওয়ামী লীগ। আজকে মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার আছে বলেই কথা বলতে পারে।
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, ডা. দীপু মনি, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মেরিনা জাহান কবিতা, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী। জাতির পিতার ওপর রচিত কবিতা আবৃত্তি করেন অধ্যাপিকা রূপা চক্রবর্তী। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ এবং উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মিলাদ মাহফিল : জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মবার্ষিকী এবং জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সোমবার দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিকবিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদবিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী এবং শিক্ষা ও সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা ড. কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী বক্তব্য দেন।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব এম তোফাজ্জল হোসেন মিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক (প্রশাসন) মো. আহসান কিবরিয়া সিদ্দিকী স্বাগত বক্তব্য দেন। প্রধানমন্ত্রীর ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি কেএম শাখাওয়াত মুন জানান, অনুষ্ঠানে বক্তারা জাতির পিতার বর্ণাঢ্য জীবন ও কর্মের স্মৃতিচারণ করেন।
মন্তব্য করুন: