প্রকাশিত:
১৮ মার্চ ২০২৪, ১৫:৩৭
রাজধানীর মিরপুর-১১ নম্বর সেকশনের ই-ব্লকের ৪ নম্বর লেনের বাসিন্দা শাহানাজ বেগম। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ভ্রাম্যমাণ বিক্রয়কেন্দ্রের ভ্যান (ফ্রিজার ভ্যান) যেখানে (কালশী) এসে দাঁড়ায়, সেখান থেকে তাঁর বাসার দূরত্ব প্রায় এক কিলোমিটার। তাই ভ্যান আসার ঘণ্টাখানেক আগেই আজ সোমবার সকাল ৯টার দিকে নির্ধারিত স্থানে গিয়ে অপেক্ষা করতে থাকেন শাহানাজ।
আজ প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মাংস-ডিম-দুধ বিক্রির ভ্রাম্যমাণ ভ্যান কালশীতে পৌঁছায় সকাল ১০টার কিছু পর। মালপত্র গুছিয়ে বিক্রি শুরু করা হয় সকাল ১০টা ২০ মিনিটের দিকে। প্রায় দেড় ঘণ্টা অপেক্ষার পর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ভ্রাম্যমাণ ভ্যান থেকে এক কেজি গরুর মাংস, এক কেজি মুরগি (ড্রেসড ব্রয়লার), দুই ডজন ডিম ও দুই লিটার দুধ কেনেন শাহানাজ। এতে তাঁর খরচ হয় ১ হাজার ১২০ টাকা। নারীদের মধ্যে তিনিই ছিলেন প্রথম ক্রেতা।
কেনাকাটা শেষে শাহানাজ প্রথম আলোকে বলেন, পরে এলে ভিড়, লম্বা লাইন থাকে। তখন গরুর মাংসও শেষ হয়ে যায়। তিনি তিন দিন আগে (গত শনিবার) শুধু ডিম আর দুধ পেয়েছিলেন। তাই আজকে ভ্যান আসার আগেই চলে এসেছেন। আজকে সবার আগে কিনেছেন। যা যা দরকার সবই পেয়েছেন।
শাহানাজের আগে পুরুষ ক্রেতাদের সারি থেকে একজনের কাছে পণ্য বিক্রি করা হয়। তাঁর নাম সারোয়ার হোসেন। কালশী এলাকার ২২ তলা গার্মেন্টসের পেছনে তাঁর বাসা। পেশায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক তিনি।
সারোয়ার প্রথম আলোকে বলেন, আরেক দিন সারিতে দাঁড়িয়েছিলেন। সেদিন শুধু ডিম পেয়েছিলেন। আজকে এক কেজি গরুর মাংস ও দুই কেজি মুরগি কিনেছেন।
সারোয়ার আরও বলেন, রাস্তায় যাত্রী পরিবহনের সময় অনেক জায়গায় ভ্যানে পণ্য বিক্রি হতে দেখেন তিনি। কিন্তু তখন কিনতে পারেন না, যাত্রী থাকে। তা ছাড়া কিনে রাখবেন কোথায়? বাসায় আসতে আসতে মাংস নষ্ট হয়ে যেতে পারে। ডিমও ভাঙতে পারে। তাই আজকে কাজে যাননি তিনি। সবার আগে ৯টার দিকে কালশীতে এসে অপেক্ষা করেন। সবার আগে কিনতে পেরেছেন।
কালশীতে দায়িত্বে থাকা বিক্রয় প্রতিনিধি রকিবুল হক প্রথম আলোকে বলেন, এখানকার জন্য আজ ১০০ কেজি গরুর মাংস, ৫০ কেজি মুরগি (ড্রেসড ব্রয়লার), ১০ কেজি খাসি, ২ হাজার ১০০টি ডিম ও ২০০ লিটার দুধ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, আজ কালশীতে বিক্রি শুরুর সময় নারীদের সারিতে ১৩ জন ও পুরুষের সারিতে ৯ জন ছিলেন। পরে ক্রেতার উপস্থিতি বাড়ে।
কালশীর বাসিন্দা মনোয়ারা বেগম বেলা ১১টার দিকে এক কেজি গরুর মাংস, ২ ডজন ডিম, ২ লিটার দুধ কেনেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আগে শুধু মুরগি, ডিম ও দুধ কিনেছি।’ পরে অনেকের কাছে শুনেছেন, গরুর মাংসও ভালো। তাই আজকে এক কেজি গরুর মাংস নিয়েছেন তিনি।
দুপুর সোয়া ১২টার দিকে ক্রেতার উপস্থিতি কমে যায়। পরে কালশী পদচারী সেতুসংলগ্ন জায়গা থেকে সরে কিছুটা সামনের দিকে এগিয়ে বড় মসজিদ সড়কে গাড়ি রাখা হয়। বিক্রয় প্রতিনিধি রকিবুল হক তখন প্রথম আলোকে বলেন, গরু ও মুরগি শেষ। খাসি ছয় কেজি অবিক্রীত আছে। ডিম ও দুধ আছে বলেও জানান তিনি।
পবিত্র রমজান মাসকে ঘিরে সুলভ মূল্যে রাজধানীর ২৫টি স্থানে দুধ, ডিম, মাছ ও মাংস বিক্রি করছে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর।
মন্তব্য করুন: