সোমবার, ২৫শে নভেম্বর ২০২৪, ১০ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | ই-পেপার
ব্রেকিং নিউজ:
  • সারাদেশে জেলা ও উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আগ্রহী হলে আপনার সিভি ই-মেইল করতে পারেন। ই-মেইল daajkaal@gmail.com
সংবাদ শিরোনাম:
  • ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অবসরপ্রাপ্তদের নিয়োগ করা হবে
  • আবারও যাত্রাবাড়ী মোড় অবরোধ ব্যাটারি রিকশাচালকদের
  • অক্টোবরে সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৭৫ জন নিহত
  • বোয়ালখালীতে আগুনে ৫ বসতঘর পুড়ে ছাই
  • ঢাকায় আসছেন যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমবিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি কেলি রদ্রিগেজ
  • প্রথমবার সচিবালয়ে যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা
  • এস আলমের ঋণ জালিয়াতি, কেন্দ্রিয় ব্যাংকের ১৩ জনকে তলব
  • সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা
  • ড. ইউনূসের ভিশনের দিকে তাকিয়ে যুক্তরাজ্য: ক্যাথরিন ওয়েস্ট
  • ২০২৫ সালে সরকারি নির্মাণে পোড়া ইট ব্যবহার বন্ধ হবে

বুকভরা অভিমান ছিল সাদি মহম্মদের

বিনোদন ডেস্ক

প্রকাশিত:
১৪ মার্চ ২০২৪, ১৫:৩৮

বুধবার রাতে হঠাৎ বরেণ্য সংগীতশিল্পী সাদি মহম্মদের মৃত্যুতে স্তব্ধ হয়ে যায় সংগীতাঙ্গন। বিনয়ী, স্বল্পভাষী এই গুণী সংগীতশিল্পী যেমন গাইতেন ভালো, তেমনি গানের শিক্ষক হিসেবেও যথেষ্ট সুনাম ছিল তাঁর। দেশের অনেক তরুণ, প্রতিষ্ঠিত শিল্পীর গুরু ছিলেন তিনি। বছরের পর বছর গানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেছেন। তাঁর রয়েছে অসংখ্য অনুরাগী। সব ফেলে বুধবার রাতে চলে গেলেন অনন্তের পথে। পরিবারের সদস্য, পুলিশ এবং হাসপাতাল সূত্রে অনেকটা স্পষ্ট, আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছিলেন এই শিল্পী। বুধবার (১৩ মার্চ) রাতে নিজ ঘর থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় তাঁর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।


আজ বৃহস্পতিবার বাদ জোহর মোহাম্মদপুর জামে মসজিদে জানাজা শেষে মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় কবরস্থানে তাঁকে সমাহিত করা হবে। তাঁর মরদেহ শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হবে না।
বুধবার রাতে জনপ্রিয় এই সংগীতশিল্পীর মৃত্যুর খবর শুনে অনেকে ছুটে যান তাঁর মোহাম্মদপুরের বাসায়। রাতে বাসা থেকে লাশ উদ্ধার করে নেওয়া হয় কাছাকাছি সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে। সাদি মহম্মদের মৃত্যুর খবর পেয়ে হাপাতালে যান নাসির উদ্দীন ইউসুফসহ সাংস্কৃতিক অঙ্গনের শুভাকাঙ্ক্ষীরা।

রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী অনিমা রায় কেঁদে কেঁদে বলেন, ‘প্রায় ১৫ দিন আগে স্যারের সঙ্গে দেখা হয়েছিল। কেরানীগঞ্জে বাংলাদেশ টেলিভিশনের “গানের ঝরনাতলা” রেকর্ডিং অনুষ্ঠানে। তিনি একটি গানের রেকর্ডিং করছিলেন। সারা দিন আমি স্যারের সঙ্গে ছিলাম। সারাটি দিন রেকর্ডিংয়ে তিনি অভিমানের কথাই বলেছিলেন।


ওই দিন অনেকক্ষণ গল্প করেছিলেন স্যার। শুধু অতীতের কথা বলছিলেন। তাঁর বাবার মৃত্যুর গল্প। মায়ের কথা। বুকভরা অভিমান ছিলই সব সময়। সেদিন সারাক্ষণ অভিমানের কথাই বলেছিলেন। এত গুণী একজন শিল্পী জাতীয় কোনো পুরস্কার পাননি। জাতীয়ভাবে কোনো সম্মানিত করা হয়নি তাঁকে। বলেছিলেন, তাঁকে যেন কখনো মরণোত্তর পদক না দেওয়া হয়। এ রকম ক্ষোভের কথাই সব সময় উঠে আসত তাঁর কাছ থেকে। ১৫ দিনের ব্যবধানে এমন দৃশ্য দেখতে হবে ভাবতেও পারিনি। তিনি চলে গেলেন বুকভরা অভিমান নিয়ে।’


হাসপাতালে ছুটে গিয়েছিলেন অভিনেতা ফারুক আহমেদ। তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘সাদি ভাইয়ের মৃত্যুর খবরে আমি এককথায় বিধ্বস্ত। ১৯৬৮ সাল থেকে তাঁদের সঙ্গে আমাদের পারিবারিক সম্পর্ক। তিনি এত ভালো মানুষ ছিলেন যে রাগ করেও কাউকে কিছু বলেছেন, এমনটা কখনোই দেখিনি। এত বড় একজন শিল্পী, কিন্তু তাঁর মধ্যে কোনো অহমিকা ছিল না। তিনি আজ চলে গেলেন। আমি তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করি।’


নৃত্যশিল্পী ও সাদি মহম্মদের পারিবারিক বন্ধু শামীম আরা নীপা বলেন, ‘ওনার মা মারা যাওয়ার পর থেকেই একটা ট্রমার মধ্যে চলে যান। ঠিক স্বাভাবিক ছিলেন না মানসিকভাবে। মা হারানোর বেদনা সম্ভবত তিনি নিতে পারেননি। এভাবেই চলছিল। বুধবার রোজা রাখলেন। ইফতারও করলেন। এরপরই তিনি নীরবে না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন।’


গতকাল সাদি মহম্মদের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শোক প্রকাশ করেছেন তাঁর ভক্ত, সহশিল্পী, কাছের মানুষেরা। অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তাফা লিখেছেন, ‘ক্ষমা করে দিয়ো সাদি ভাই...তোমার কাছে চিরঋণী হয়ে থাকব আমরা। শান্তিতে মায়ের কোলে ঘুমাও।’ প্রায় সবারই একই মন্তব্য, অভিমান নিয়ে চলে যাওয়া মানুষটার মর্যাদা দেওয়া হয়নি।

 


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর