সোমবার, ২৫শে নভেম্বর ২০২৪, ১০ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | ই-পেপার
ব্রেকিং নিউজ:
  • সারাদেশে জেলা ও উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আগ্রহী হলে আপনার সিভি ই-মেইল করতে পারেন। ই-মেইল daajkaal@gmail.com
সংবাদ শিরোনাম:
  • ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অবসরপ্রাপ্তদের নিয়োগ করা হবে
  • আবারও যাত্রাবাড়ী মোড় অবরোধ ব্যাটারি রিকশাচালকদের
  • অক্টোবরে সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৭৫ জন নিহত
  • বোয়ালখালীতে আগুনে ৫ বসতঘর পুড়ে ছাই
  • ঢাকায় আসছেন যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমবিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি কেলি রদ্রিগেজ
  • প্রথমবার সচিবালয়ে যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা
  • এস আলমের ঋণ জালিয়াতি, কেন্দ্রিয় ব্যাংকের ১৩ জনকে তলব
  • সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা
  • ড. ইউনূসের ভিশনের দিকে তাকিয়ে যুক্তরাজ্য: ক্যাথরিন ওয়েস্ট
  • ২০২৫ সালে সরকারি নির্মাণে পোড়া ইট ব্যবহার বন্ধ হবে

ফিলিস্তিনিদের ইচ্ছাকৃতভাবে অনাহারে মারতে চায় ইসরাইল: জাতিসংঘ

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত:
২৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৪, ১৩:০১

দখলদার ইসরাইল ফিলিস্তিনিদের ইচ্ছাকৃতভাবে অনাহারে মেরে ফেলতে চায় বলে অভিযোগ করেছেন জাতিসংঘের বিশেষ দূত মাইকেল ফাখরি।

 

তিনি বলেন, এই ইচ্ছাকৃত অপরাধের জন্য ইসরাইলকে যুদ্ধাপরাধ ও গণহত্যার দায়ে জবাবদিহির আওতায় আনা উচিত।

ফাখরি বলেন, ইসরাইল ইচ্ছাকৃতভাবে গাজাবাসীর খাবার সরবরাহ নষ্ট করছে এবং অবরুদ্ধ অঞ্চলটিতে খাদ্য সহায়তা প্রবেশে বাধা দিচ্ছে। দেশটি গত বছরের অক্টোবরে শুরু হওয়া সংঘাতের একদম শুরু থেকেই এমনটি করছে। তাদের এই ইচ্ছাকৃতভাবে বেসামরিক নাগরিককে খাদ্য থেকে বঞ্চিত করা যুদ্ধাপরাধ।

তিনি বলেন, মূলত আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গঠনের লক্ষ্যে স্বাক্ষরিত রোম চুক্তি অনুসারে এই বাধা দেওয়া যুদ্ধাপরাধ। ওই চুক্তিতে বলা হয়েছে— ‘ইচ্ছাকৃতভাবে ত্রাণ সরবরাহে বাধা প্রদানসহ তা বেঁচে থাকার জন্য অপরিহার্য রসদ থেকে মানুষকে বঞ্চিত করা’ যুদ্ধাপরাধের শামিল। সুতরাং ইসরাইল যা করছে তা স্পষ্টতই যুদ্ধাপরাধ।

 

বিশ্বের একাধিক মানবাধিকার সংগঠন অভিযোগ করেছে, ইসরাইল গাজায় যুদ্ধ পরিচালনার সময় ইচ্ছাকৃতভাবে গাজাবাসীকে ক্ষুধার্ত রাখার কৌশল নিয়েছে। দেশটি এ বিষয়টিকে একটি অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদও ২০১৮ সালে এ ধরনের কর্মকাণ্ডকে যুদ্ধাপরাধ বলে ঘোষণা করেছে।

জাতিসংঘের এই কর্মকর্তা বলেছেন, গাজায় ত্রাণ প্রবেশে বাধা, গাজাবাসীর মাছ ধরার ছোট নৌকা আটক, তাদের বাগানগুলোকে ধ্বংস করার ঘটনা স্থানীয়দের খাবার থেকে বঞ্চিত করার উদ্দেশ্যে ছাড়া আর কিছুই নয়। তার কথায়, ‘ফিলিস্তিনি জনগণকে সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে কেবল ফিলিস্তিনি হওয়ার জন্য ধ্বংস করার অভিপ্রায় ঘোষণা করেছে ইসরাইল।

মাইকেল ফাখরি বলেন, গাজার বর্তমান পরিস্থিতি স্পষ্টত ‘গণহত্যা’ এবং কেবল কোনো ব্যক্তি বা সরকার নয়, সমগ্র ইসরাইল এ জন্য ‘অপরাধী’ এবং তাদের জবাবদিহির আওতায় আনা উচিত।

 

তিনি বলেন, ইসরাইল শুধু বেসামরিক মানুষকেই টার্গেট করছে না। তারা তাদের সন্তানদের ক্ষতি করে ফিলিস্তিনি জনগণের ভবিষ্যৎ নষ্ট করার চেষ্টা করছে।

জাতিসংঘের এই কর্মকর্তা সেসব দেশেরও তীব্র সমালোচনা করেছেন, যারা ফিলিস্তিনিদের জন্য জাতিসংঘের ত্রাণ ও কর্মসংস্থান সংস্থায় (ইউএনআরডব্লিউএ) তহবিল কমিয়ে দিয়েছে।

গত বছরের ৭ অক্টোবরে হামাসের হামলার সঙ্গে ইউএনআরডব্লিউএর ১২ কর্মী জড়িত থাকার ইসরাইলি দাবির পর সংস্থাটিতে তহবিল দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, ইতালি, কানাডাসহ বেশ কয়েকটি দেশ। ইউএনআরডব্লিউএ অধিকৃত ফিলিস্তিনি অঞ্চল ও মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে প্রায় ৬০ লাখ ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তুদের খাবার, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ও অন্যান্য মৌলিক পরিষেবা সরবরাহ করে থাকে।

মাইকেল ফাখরি বলেন, কিছুসংখ্যক কর্মীর বিরুদ্ধে অপ্রমাণিত দাবির ভিত্তিতে তাৎক্ষণিভাবে একযোগে একাধিক দেশের ইউএনআরডব্লিউএর জন্য তাহবিল বন্ধ করার পদক্ষেপ নেওয়ার পেছনে ফিলিস্তিনিদের সম্মিলিতভাবে শাস্তি ছাড়া অন্য কোনো উদ্দেশ্য নেই। যেসব দেশ এই লাইফলাইন প্রত্যাহার করেছে, তারা নিঃসন্দেহে ফিলিস্তিনিদের অনাহারে থাকার ঘটনায় জড়িত।

জাতিসংঘের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ইসরাইল দাবি করবে যুদ্ধাপরাধের ব্যতিক্রম আছে। কিন্তু গণহত্যার কোনো ব্যতিক্রম নেই এবং কেন ইসরাইল বেসামরিক অবকাঠামো, খাদ্য ব্যবস্থা, মানবিক কর্মীদের ধ্বংস করছে এবং শিশুদের অপুষ্টি ও দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি করছে তা নিয়ে কোনো যুক্তি নেই। গণহত্যার অভিযোগ পুরো রাষ্ট্রকে দায়ী করে।

 উপপ্রধান রমেশ রাজাসিংঘাম জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে বলেছেন, ফেব্রুয়ারির শেষ সময়ে এসে আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, গাজার জনসংখ্যার এক-চতুর্থাংশ, পাঁচ লাখ ৭৬ হাজার মানুষ দুর্ভিক্ষ থেকে মাত্র এক কদম দূরে।

একই সঙ্গে তিনি সতর্ক করে বলেছেন, কোনো ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া না হলে গাজায় দুর্ভিক্ষ ‘অনিবার্য’।

 


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর