প্রকাশিত:
২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৪, ১৫:৩৪
‘কাছের মানুষ দূরে থুইয়া’ একটি স্পর্শের গল্প। জীবনের প্রয়োজনে দূরে যাওয়া আবার অনুভূতির আলোড়নে ফিরে আসার গল্প। লং ডিসট্যান্স রিলেশনশিপে পরস্পর থেকে হাজারো মাইল দূরে থাকা প্রেমিক-প্রেমিকার কষ্টের গল্প। দূরত্ব কীভাবে সম্পর্কে ক্লেদ, সন্দেহ, অবিশ্বাস, রাগ, ক্ষোভ, বিচ্ছেদ ঘটায়, তার গল্প। গত বৃহস্পতিবার চরকিতে মুক্তি পেয়েছে শিহাব শাহীনের ওয়েব ফিল্মটি। প্ল্যাটফর্মটির ‘মিনিস্ট্রি অব লাভ’ প্রকল্পের দ্বিতীয় সিনেমা এটি।
‘কাছের মানুষ দূরে থুইয়া’ দিয়ে প্রথমবারের মতো জুটি বেঁধেছেন প্রীতম হাসান ও তাসনিয়া ফারিণ। সেই সঙ্গে চরকিতে প্রথমবার মতো দেখা গেছে রূপন্তী আকিদকে। ২ ঘণ্টা ২৪ মিনিটের এই সিনেমায় আরও অভিনয় করেছেন সমাপ্তি মাশুক, খলিলুর রহমান কাদেরী, শিরিন আলম, শুভজিৎ ভৌমিক, শাহীন শাহনেওয়াজসহ আরও অনেকে।
মুক্তির দুই দিনেই সামাজিক মাধ্যমে সিনেমাটি নিয়ে বেশ ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে, যা নিয়ে পরিচালক শিহাব শাহীনও বেশ উচ্ছ্বসিত। তিনি বলেন, ‘আমি সব সময় চেষ্টা করি দর্শকদের নতুন কিছু উপহার দেওয়ার। সিনেমাটি নির্মাণ করতে গিয়ে এটাই মাথায় ছিল। দর্শকদের যে কাজ ভালো লাগছে, এটা জেনে খুব আনন্দ লাগছে। ভালোবাসার গল্পে লং ডিসট্যান্স সম্পর্ক নিয়ে আমাদের এখান খুব কম কাজ হয়েছে। তাই ভালোবাসার এই দিক নিয়েই কাজ করেছি।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেক দর্শক বলছেন, সিনেমাটির গল্প ও প্রতিটি চরিত্র তাঁদের খুব চেনা মনে হয়েছে; এ জন্যই ‘কাছের মানুষ দূরে থুইয়া’র সঙ্গে সহজে সম্পৃক্ত হতে পেরেছেন। ইদানীং বাংলাদেশের বিভিন্ন কনটেন্টের নিয়মিত রিভিউ করে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন ইউটিউব চ্যানেল। সেখানেই প্রশংসা পেয়েছে ওয়েব ফিল্মটি। সমালোচকদের বেশি মুগ্ধ করেছে সিনেমাটিতে থাকা ভালোবাসার ‘দেশি গন্ধ’।
ইউটিউব চ্যানেল রূপমস রিভিউয়ের রূপমের কাছে মনে হয়েছে, সিনেমাটি যেন ‘বাংলার লাভ আজকাল’। তিনি নিজের রিভিউতে বলেন, ‘তাসনিয়া ফারিণ ও প্রীতম হাসানের যে রসায়ন, সেটা দারুণ; তাঁদের দেখতে এত ভালো লেগেছে! তাঁদের চরিত্র দুটিও দারুণভাবে লেখা হয়েছে; সঙ্গে পারফরম্যান্সও ছিল দেখার মতো।’
রূপমের মতে, এখনকার রোমান্টিক গল্পগুলোতে দুজনের সম্পর্ক তৈরি হওয়ার জন্য জায়গা দেওয়া হয় না, সে রকম কোনো মুহূর্তও তৈরি হয় না। কিন্তু কাছের মানুষ দূরে থুইয়ায় সেটি আছে বলে বেশি ভালো লেগেছে তাঁর। আরেকটি ইউটিউব চ্যানেল আর্টিস্টিক সেভেনথ সেন্সের সাগরনীল ওয়েব ফিল্মটি নিয়ে বলেন, ‘যাঁরা ড্রামা ঘরানার কাজ দেখেন তাঁদের জন্য বলতে পারি, বাংলা কনটেন্টের বিচারে এটা বেশ ভালো হয়েছে। এখানে সবার পারফরম্যান্স ভালো। তাসনিয়া ফারিণ জাস্ট ফাটিয়ে দিয়েছেন, প্রীতম হাসানও ভালো; তাঁদের রসায়ন ভালোভাবে কাজ করে। স্রেফ অভিনয় দিয়েই কাজটিতে অন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ড্রামার ক্ষেত্রে অভিনয়টা খুব গুরুত্বপূর্ণ।’
তাসনিয়া ফারিণ অভিনয়ে এখন নিয়মিত মুখ। তবে ‘কাছের মানুষ দূরে থুইয়া’র গল্প যেন তাঁর জীবনের সঙ্গে একদম মিলে যায়। কারণ, দীর্ঘদিন লং ডিসট্যান্স রিলেশনশিপে থাকার পর কিছুদিন আগেই অভিনেত্রী বিয়ে করেছেন ভালোবাসার মানুষকে। কাজটি করতে গিয়ে বেশ আবেগপ্রবণও হয়ে পড়েছিলেন ফারিণ। তিনি বলেন, ‘এটা খুব ভালোবাসার একটা কাজ। শিহাব ভাইয়ের সঙ্গে কাজ করাটা সব সময় দারুণ অভিজ্ঞতা। সেই সঙ্গে পুরো টিমও দারুণ ছিল। প্রীতমের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতাও খুব ভালো। দর্শক এখন সিনেমাটা দেখে পছন্দ করলে তবেই আমাদের সার্থকতা।’
প্রীতম হাসান গায়ক থেকে নায়ক হয়েছেন এই সিনেমায়। অভিনয় নিয়ে তাঁর পরিকল্পনা কী বা অভিনয়ে নিয়মিত হবেন কি না, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘অভিনয়ে নিয়মিত হব কি না, এটা ভাবার চেয়ে ভালো কাজ করার ভাবনা বেশি। অভিনয় তো খুব কম করা হয়। কম কাজই বেশি সময় নিয়ে করতে চাই। সিনেমাটা দেখে দর্শক আমাকে পছন্দ করছেন, আমাদের কাজটা দেখছেন, এটাই প্রাপ্তি।’
‘কাছের মানুষ দূরে থুইয়া’র চিত্রনাট্য লিখেছেন পরিচালক শিহাব শাহীন জাহান সুলতানা। সিনেমাটোগ্রাফি কামরুল ইসলাম শুভর। সম্পাদনা ও কালার গ্রেডিং করেছেন লিওন রোজারিও। খৈয়াম সানু সন্ধি ও ইমন চৌধুরী ছিলেন সংগীতের দায়িত্বে। এ ছাড়া সাউন্ড ডিজাইন করেছেন রিপন নাথ; ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর খৈয়াম সানু সন্ধির। রূপসজ্জা করেছেন আতিয়া রহমান, কস্টিউম ডিজাইন করেছেন ইমন খন্দকার ও শিল্পনির্দেশনায় ছিলেন নাইমা জামান।
মন্তব্য করুন: