সোমবার, ২৫শে নভেম্বর ২০২৪, ১১ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | ই-পেপার
ব্রেকিং নিউজ:
  • সারাদেশে জেলা ও উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আগ্রহী হলে আপনার সিভি ই-মেইল করতে পারেন। ই-মেইল daajkaal@gmail.com
সংবাদ শিরোনাম:
  • লঘুচাপটি নিম্নচাপে পরিণত, যা বলছে আবহাওয়া অফিস
  • ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অবসরপ্রাপ্তদের নিয়োগ করা হবে
  • আবারও যাত্রাবাড়ী মোড় অবরোধ ব্যাটারি রিকশাচালকদের
  • অক্টোবরে সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৭৫ জন নিহত
  • বোয়ালখালীতে আগুনে ৫ বসতঘর পুড়ে ছাই
  • ঢাকায় আসছেন যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমবিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি কেলি রদ্রিগেজ
  • প্রথমবার সচিবালয়ে যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা
  • এস আলমের ঋণ জালিয়াতি, কেন্দ্রিয় ব্যাংকের ১৩ জনকে তলব
  • সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা
  • ড. ইউনূসের ভিশনের দিকে তাকিয়ে যুক্তরাজ্য: ক্যাথরিন ওয়েস্ট

প্রতিশ্রুতি পূরণই বড় চ্যালেঞ্জ

ডেস্ক রির্পোট

প্রকাশিত:
১৩ জানুয়ারী ২০২৪, ১০:৪১

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করল। ১১ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের কাছে নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যরা শপথ নেন। বুধবার সন্ধ্যায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সংবিধান অনুযায়ী, দ্বাদশ জাতীয় সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের আস্থাভাজন সংসদ সদস্য শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী পদে নিয়োগের সিদ্ধান্ত দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি। একই সঙ্গে তাঁর নেতৃত্বে নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের বিষয়ে সম্মতি দিয়েছেন।

তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হলো বিগত মন্ত্রিসভার ৩০ জন সদস্যই নতুন মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পাননি। এর মধ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অর্থ, বাণিজ্য, পররাষ্ট্র, পরিকল্পনা, স্বাস্থ্য ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরাও বাদ পড়েছেন। বিদায়ী মন্ত্রিসভার সদস্যদের সাফল্য-ব্যর্থতার নিরিখে নতুন মন্ত্রিসভায় সংযোজন ও বিয়োজন ঘটে থাকতে পারে। দেখা যাচ্ছে বিগত সরকারে যেসব মন্ত্রণালয়ের কর্মকৃতি নিয়ে বেশি সমালোচনা হয়েছে, সেসব মন্ত্রণালয়ের কয়েকজন ‘অভিভাবক’ বাদ পড়েছেন। তবে একই সঙ্গে এটাও বলা প্রয়োজন যে বিগত সরকারের সময় দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে অভিযুক্ত কেউ কেউ নতুন মন্ত্রিসভায় রয়ে গেছেন। ফলে নতুন সরকার দুর্নীতি কমাতে কতটা ভূমিকা রাখতে পারবে, সে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।


নির্বাচনের আগে সরকার জনগণের কাছে নানা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, সেগুলো যথাযথভাবে পূরণ করার ওপরই নির্ভর করবে নতুন সরকারের সাফল্য ও ব্যর্থতা। যে মন্ত্রিসভা গঠন করা হয়েছে এবং সেখানে যাঁরা নিয়োগ পেয়েছেন, তাঁদের যোগ্যতা-দক্ষতার বিষয়টিও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অতীতের সাফল্য-ব্যর্থতা ও কর্মকাণ্ড বিবেচনায় নিলে মন্ত্রিসভার সব সদস্য সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন, এমন বলা যাবে না। সে হিসেবে নতুন মন্ত্রিসভা সম্পর্কে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে বিভিন্ন মহলে।

অর্থনৈতিক পরিস্থিতি সামাল দেওয়া নতুন সরকারের সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। আওয়ামী লীগ নির্বাচনী ইশতেহারে নিত্যপণ্যের দাম কমিয়ে আনা, কর্মসংস্থান বাড়ানো, সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের ওপর জোর দিয়েছে। একই সঙ্গে গণতন্ত্রচর্চার পরিধি বাড়ানো, বৈষম্য কমানোর কথাও বলা হয়েছে। এসব লক্ষ্য বাস্তবায়ন করতে হলে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার পাশাপাশি অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে হবে। নতুন সরকার এই চ্যালেঞ্জ কীভাবে মোকাবিলা করবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

পররাষ্ট্র ক্ষেত্রে ভারসাম্য রক্ষার বিষয়টি নতুন সরকারের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দিতে পারে। সে ক্ষেত্রে ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে শত্রুতা নয়’ আমাদের পররাষ্ট্রনীতির এই মূলমন্ত্রের ভিত্তিতেই সরকারকে নীতি-পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা কয়েকটি শক্তিধর দেশের সঙ্গে সরকারের যে টানাপোড়েন চলছে, তা অবসানে উদ্যোগ নেওয়া জরুরি। নির্বাচন নিয়ে তারা সমালোচনা করলেও দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে তাদের ভূমিকা অব্যাহত রাখার কথা বলেছে। এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা পশ্চিমের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নের ওপর জোর দিয়েছেন।


সরকারের নীতিনির্ধারকদের মনে রাখতে হবে, অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা থাকা জরুরি। নির্বাচনের পর নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে সরকার ও বিরোধী দল উভয়কে কর্মপন্থার বিষয়ে নতুন করে ভাবতে হবে। পুরোনো দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টাতে হবে। নির্বাচনী কাজে বাধা দিয়েছেন বা দিতে পারেন, এই অজুহাতে বিরোধী দলের হাজার হাজার নেতা-কর্মীকে আটক করা হয়েছিল, যা নিয়ে দেশের ভেতরে ও বাইরে ব্যাপক সমালোচনা হয়েছে। সরকার বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের অবিলম্বে মুক্তি দিয়ে নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতি তৈরির পথ উন্মুক্ত করতে পারে।

তবে ব্যক্তির রদবদলের চেয়েও সরকারের সাফল্য অনেক বেশি নির্ভর করে কাজে তার কাজের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির ওপর। সংসদে বিরোধী দল এবং সংসদের বাইরে সংবাদমাধ্যম ও নাগরিক সমাজ এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। সংসদে শক্তিশালী বিরোধী দল নেই। সংসদের বাইরে নাগরিক সমাজ ও সংবাদমাধ্যমের সমালোচনাকেও যদি সরকার ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করে, তাহলে কাজের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি আনা সম্ভব ও গ্রহণযোগ্য হবে বলে আমরা মনে করি।

 


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর