প্রকাশিত:
৩ জানুয়ারী ২০২৪, ১৬:২৮
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় ঋণ এই প্রথম ৩৪ ট্রিলিয়ন বা ৩৪ লাখ কোটি ডলারে উন্নীত হয়েছে। দেশটির রাজস্ব বিভাগ ২ জানুয়ারি মঙ্গলবার এ তথ্য জানিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে দেশটির কংগ্রেস সদস্যেরা আবারও ঋণ নিয়ে আলোচনার জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের সংবাদে বলা হয়েছে, ২৯ ডিসেম্বর শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় ঋণ ৩৪ দশমিক ০১ ট্রিলিয়ন বা ৩৪ লাখ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যায়। এর আগে বৃহস্পতিবার তা ছিল ৩৩ দশমিক ৯১ ট্রিলিয়ন ডলার।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় ঋণ ৩৩ ট্রিলিয়ন থেকে ৩৪ ট্রিলিয়ন ডলারে উঠতে খুব একটা সময় নেয়নি। গত সেপ্টেম্বর মাসে দেশটির জাতীয় ঋণ ৩৩ ট্রিলিয়ন ডলার স্পর্শ করে; এর ৪ মাসের মধ্যে তা ৩৪ ট্রিলিয়ন ডলার স্পর্শ করল। একদিকে দেশটির ফেডারেল রাজস্ব কমছে, অন্যদিকে ব্যয় বাড়ছে—উভয় কারণে দেশটির জাতীয় ঋণ দ্রুত বাড়ছে।
এদিকে গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় ঋণের সীমা বাড়ানো নিয়ে জটিলতার সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে কংগ্রেসে ডেমোক্রেটিক ও রিপাবলিকান দলের সদস্যদের মধ্যে দফায় দফায় আলোচনা হয়। শেষ সময় ছিল ৫ জুন, তার মধ্যে জাতীয় ঋণ নিয়ে ঐকমত্য না হলে খেলাপি হয়ে যেত যুক্তরাষ্ট্র। শেষ পর্যন্ত তার আগেই সাময়িকভাবে জাতীয় ঋণসীমা স্থগিতের সিদ্ধান্ত হয়।
আগামী সপ্তাহে কংগ্রেসের নতুন অধিবেশন শুরু হবে। জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত যে ব্যয় হয়েছে, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার শেষ সময় ১৯ জানুয়ারি ও ২ ফেব্রুয়ারি। রিপাবলিকানদের দাবি, গত জুন মাসে যে ঐকমত্য হয়েছিল, সরকারের ইচ্ছাধীন ব্যয় সেই সীমার নিচেই থাক। কিন্তু বাইডেন সরকার ইউক্রেনকে জরুরি সহায়তা দেওয়ার পাশাপাশি ইসরায়েলকেও সাহায্য দিতে চায়। এর ফলে ঋণসীমা নিয়ে আলোচনা জটিল আকার ধারণ করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
২০২৪ সালে ব্যয়ের জন্য প্রায় এক ডজন বিল কংগ্রেসে অনুমোদন না হলে ওয়াশিংটনের সরকারি সংস্থাগুলো একরকম শাটডাউনের পর্যায়ে চলে যাবে। এ বছর দেশটির প্রেসিডেন্ট ও কংগ্রেস নির্বাচন, এই পরিস্থিতিতে ঐকমত্য হওয়াও কঠিন।
আর্থিক খাতবিষয়ক নজরদারি প্রতিষ্ঠান কমিটি ফর আ রেসপনসিবল ফেডারেল বাজেটের সভাপতি মায়া ম্যাকগুইনিয়াস রয়টার্সকে বলেছেন, জাতীয় ঋণ ৩৪ ট্রিলিয়ন ডলারে উঠে যাওয়া বিষাদগ্রস্ত হওয়ার মতো বিষয়।
হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র মাইকেল কিকুকাওয়া রয়টার্সকে বলেন, রিপাবলিকান সরকার ২০১৭ সালে ধনী ও করপোরেটদের ছাড় দিতে যে কর হ্রাস করেছিল, জাতীয় ঋণ বেড়ে যাওয়া তার ‘চুইয়ে পড়া প্রভাব’।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের জমানার এই করহ্রাসের সিদ্ধান্তের জের টানতে হচ্ছে উল্লেখ করে কিকুকাওয়া আরও বলেন, রিপাবলিকানরা তারপরও থামছে না; এখন তারা আবার যে প্রস্তাব দিয়েছে, তাতে ধনীদের আরও তিন ট্রিলিয়ন বা তিন লাখ কোটি ডলার করছাড় মিলবে। পরিণামে দেশটির পরিশ্রমী সাধারণ মানুষেরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন, তাঁদের কর বেড়ে যেতে পারে এবং সেই সঙ্গে সামাজিক খাতে ব্যয় আরও কমতে পারে।
মাইকেল কিকুকাওয়া আরও বলেন, আগামী ১০ বছরে রাজস্ব ঘাটতি আড়াই ট্রিলিয়ন ডলার বা আড়াই লাখ কোটি ডলার কমানোর পরিকল্পনা জো বাইডেন হাতে নিয়েছেন। সে জন্য তিনি বড় করপোরেশন ও ধনী মার্কিনিদের কর বাড়াতে চান। এ ছাড়া ওষুধ ও তেল কোম্পানিগুলোর জন্য ব্যয় হ্রাস করতে চান তিনি।
মন্তব্য করুন: