প্রকাশিত:
২৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ১১:৫৮
তুহিন আক্তার যখন ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা, তখন পারিবারিক কলহের জেরে স্বামী তাঁকে ছেড়ে চলে যান। পরে একটি পলিথিন কারখানায় কাজ করে ছোট ছোট তিন সন্তান নিয়ে কোনোরকমে চলছিলেন তিনি। কয়েক মাস আগে শারীরিক কারণে তিনি চাকরি ছেড়ে দেন। পরে তাঁর একটি ছেলেসন্তান হয়। ছেলের জন্মের তিন দিন পর গতকাল শনিবার তাকে তিনি পাঁচ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেন বলে অভিযোগ।
সন্তান বিক্রির বিষয়ে জানতে চাইলে মুঠোফোনে তুহিন আক্তার বলেন, ‘সন্তান বেচে দিছি কইছে কে? আমার জামাই আমারে ছাইড়া চইলা গেছে। বাচ্চা পালার টাকাপয়সা নাই। হের লাইগা বাচ্চাটা আমি তাদের দিয়া দিছি। হেরা খুশি হইয়া আমারে একটা থ্রি-পিচ ও তিন হাজার টাকা দিছে।’
তুহিন আক্তার দিনাজপুরের বিরল উপজেলার জোসরাল গ্রামের সেলিম মিয়ার স্ত্রী। স্বামী তাঁকে ছেড়ে যাওয়ার পর তিনি গাজীপুরের সফিপুর পূর্বপাড়া এলাকায় একটি বাড়িতে ঘর ভাড়া নিয়ে থাকতেন। এখন তিনি গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার রাখালিয়াচালা এলাকায় নিজের গ্রামের বাড়িতে আছেন।
সফিপুর পূর্বপাড়া এলাকার যেখানে তুহিন আক্তার থাকতেন সেখানকার কয়েকজন বলেন, গত বৃহস্পতিবার রাতে তুহিন একটি ছেলেসন্তানের জন্ম দেন। তাকে লালন–পালন করার সামর্থ্য তাঁর নেই। পরে নবজাতককে দত্তক দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি ও তাঁর মা খাদিজা বেগম। কালিয়াকৈর উপজেলার রাখালিয়াচালা গ্রামের প্রবাসী মনির হোসেনের স্ত্রী নাসিমা বেগমের কাছে নবজাতককে দেন তাঁরা। পাঁচ হাজার টাকায় তাঁরা নবজাতককে বিক্রি করেছেন বলে স্থানীয়দের ভাষ্য।
তুহিনের মা খাদিজা আক্তারের দাবি, তাঁর মেয়ের আগে তিন সন্তান আছে। জামাতা আরেক বিয়ে করে চলে যাওয়ায় তাঁর মেয়ে ছয়, তিন ও দেড় বছর বয়সী তিন সন্তানকে নিয়ে চলতে পারে না ভালোভাবে। তাই ছেলেকে দত্তক দিয়েছেন তাঁর মেয়ে।
কালিয়াকৈর উপজেলার রাখালিয়াচালা এলাকার কয়েকজন বলেন, নাসিমা বেগমের একটি মেয়ে আছে। তিনি পাঁচ হাজার টাকায় ছেলে নবজাতকটিকে কিনে নেন।
এ বিষয়ে কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, এ রকম কোনো ঘটনা তিনি জানেন না। খোঁজখবর নিয়ে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করবেন।
মন্তব্য করুন: