প্রকাশিত:
১৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৭:০৫
হোয়াইট নয়েজ মেশিন বেশির ভাগ ক্ষেত্রে নাক ডাকার ফলে সৃষ্ট ঘুমের ব্যাঘাতে ভালো সমাধান দেয়। এ যন্ত্র মূলত মৃদু শব্দ উৎপাদন করে। ফলে সঙ্গীর তীব্র নাক ডাকার শব্দের বদলে এ যন্ত্রের শব্দই কানে পৌঁছায়। তবে মনে রাখবেন, নাক ডাকার শব্দে অভ্যস্ত হলেও তা নিরাপদ নয়। এটি আপনার শ্রবণশক্তিতে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতিসাধণ করতে পারে। তাই তুলনামূলকভাবে এই পদ্ধতি বেশ নিরাপদ। তবুও এই পদ্ধতি গ্রহণ করার আগে বেশ কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। যন্ত্রের মৃদু শব্দও আপনার শ্রবণশক্তি কমিয়ে দিতে পারে। যন্ত্রের নিরবচ্ছিন্ন শব্দ উৎপাদন শ্রবণতন্ত্রকে বিশ্রাম নিতে দেয় না। ফলে শ্রবণতন্ত্র প্রয়োজনীয় ক্রিয়াকলাপ সম্পন্ন করতে পারে না। যন্ত্রের শব্দ যদি বেশ তীব্র হয়ে পড়ে, তাহলে তা আরও ক্ষতির কারণ হয়ে ওঠে।
হোয়াইট নয়েজ মেশিনের ঠিক উল্টো কাজটা করে ইয়ার প্লাগ। অর্থাৎ বাইরের যাবতীয় শব্দ শোষণ করে নেয় এই প্লাগ। ফলে শ্রোতার কানে বাইরের কোনো শব্দই যায় না বললে চলে। ইয়ার প্লাগ ফোম, সিলিকনসহ নানারকম উপাদানে তৈরি হতে পারে। আপনার জন্য কোনটি আরামদায়ক, তা বুঝে নিন। আপনার কর্ণকুহরের প্রশস্ততা কতটুকু বা আপনি অ্যালার্জিতে কতটা সংবেদনশীল—এসব বিষয় ইয়ার প্লাগ ব্যবহারের আগে বিবেচনায় নিন। তবে ইয়ার প্লাগ ব্যবহার করে ঘুমাতে গেলে পরিবারের শিশুর কান্না বা প্রবীণের ডাক থেকে শুরু করে জরুরি কোনো শব্দ শোনা না–ও যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করুন। এ ছাড়া ইয়ার প্লাগ ব্যবহারের ফলে কর্ণকুহরে একধরনের মোম তৈরি হতে পারে। এই মোম শ্রবণসমস্যা সৃষ্টি করে। কানে তালা লাগার মতো অস্বস্তিকর অবস্থা হতে পারে। ইয়ার প্লাগ থেকে কানে সংক্রমণও ঘটতে পারে।
এ ক্ষেত্রে ঘরে ছোট আকারের সাউন্ড বক্স বা স্পিকার রাখতে হয়। ঘুমাতে যাওয়ার আগে সাউন্ড বক্সে চালাতে হয় নির্দিষ্ট তরঙ্গের শব্দ। এতে ঘুম দ্রুত আসে ও গভীর হয়। শব্দের বিভিন্ন রকম তীব্রতাকে সহজে চেনার জন্য কয়েকটি আলাদা আলাদা রঙের নাম দিয়ে তা সংজ্ঞায়িত করা হয়। যেমন গোলাপি রঙের শব্দ, বাদামি ও নীল রঙের শব্দ। গোলাপি রঙের শব্দ ঘুম আনতে বেশ উপকারী। অন্যদিকে নীল রঙের শব্দ খুবই বিরক্তিকর। তাই নিজের সুবিধা ও স্বাচ্ছন্দ্য বুঝে নির্দিষ্ট রঙের শব্দ সাউন্ড বক্সে চালিয়ে ঘুমাতে পারেন। এ ছাড়া প্রাকৃতিক বিভিন্ন শব্দ, যেমন সমুদ্রের ঢেউ, ঝরনা কিংবা শাস্ত্রীয় সংগীত ইত্যাদি চালিয়ে দেখতে পারেন।
কই বিছানায় ঘুমাতে অভ্যস্ত। বড় হলে ধীরে ধীরে তাদের বিছানা আলাদা করে দিতে হয়। এ সময় ঘুম না আসা পর্যন্ত মা কিংবা বাবাকে শিশুর পাশে থেকে অভয় দিতে হয়। এরপর শিশু ঘুমিয়ে গেলে তাকে একা রেখে মা–বাবা নিজেদের মতো ঘুমিয়ে পড়েন। এই পদ্ধতিকে বলে ‘ক্যাম্পিং আউট’। আপনার নাক ডাকা সঙ্গীর বেলায়ও এই পদ্ধতি প্রয়োগ করতে পারেন। তিনি যদি রাতে একা ঘুমাতে ভয় পান বা একাকীত্ব অনুভব করেন, তাহলে এভাবে তার পাশে থাকুন এবং একসময় নিজের মতো করে ঘুমাতে যান।
একেক রকম। একজনের আচার-আচরণ ও অভ্যাসের সঙ্গে আরেকজনের সম্পূর্ণ মিল থাকা প্রায় অস্বাভাবিক। তাই আপনার সঙ্গীর সুবিধা-অসুবিধাগুলোর দিকে খেয়াল রাখুন। আপনার সঙ্গী কেন ঘুমে নাক ডাকছেন, তা খুঁজে বের করুন। প্রয়োজনে চিকিৎসকের কাছে যান। এটাকে স্বাভাবিকভাবেই নিন। আপনার ঘুমের সমস্যা হলেও তা সহজে মেনে নিন। এরপর ধীরে ধীরে সমস্যার সমাধান খুঁজুন। এটা জীবনসঙ্গী হিসেবে আপনার দায়িত্ব। বিরক্ত হয়ে সঙ্গীর বিছানা আলাদা করে দেওয়া খুব অমানবিক। লেখার শুরুতেই বলেছি, এটি দাম্পত্য সম্পর্কে ফাটল পর্যন্ত ধরায়।
মন্তব্য করুন: