প্রকাশিত:
১৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:৫২
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর তো বটেই, দেশের আবহাওয়া গবেষকেরাও এবার একই কথা বলেছিলেন। এবার শীত কম পড়বে। মাসের অর্ধেক সময় কেটে যাওয়ার পরও দেশের কোথাও শৈত্যপ্রবাহ শুরু হলো না। ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামছে না। ফলে মাসের প্রথম দুই সপ্তাহজুড়ে হালকা শীতের যে আমেজ চলছে, মাসের বাকি সময়েও শীতের এমন অনুভূতি থাকতে পারে। এমনই পূর্বাভাস দিচ্ছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
দক্ষিণ এশিয়ার আবহাওয়াবিদদের সংগঠন সাউথ এশিয়া ক্লাইমেট আউটলুক ফোরাম থেকেও বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়াজুড়ে এবার কম শীত পড়ার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। সংগঠনটি থেকে দেওয়া উইন্টার আউটলুক-২০২৩-২৪ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এবার শীতকালে স্বাভাবিকের চেয়ে কম শীত পড়বে। অর্থাৎ তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকতে পারে।
সংগঠনটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এবার বৈশ্বিক আবহাওয়া চক্রে ‘এল নিনো’র প্রভাব শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। প্রশান্ত মহাসাগর থেকে ভারত মহাসাগর হয়ে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত ওই এল নিনো শক্তিশালী থাকলে সমুদ্রের তাপমাত্রা বেড়ে যায়। এতে জলীয় বাষ্প বেড়ে গিয়ে বাতাসে উষ্ণতা বাড়িয়ে দেয়। ফলে শীতের হিমেল বাতাস কোণঠাসা হয়ে পড়ে। ঠান্ডার অনুভূতি কমে আসে।
প্রতিবেদনটিতে এবার তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার কারণে বিদ্যুতের ব্যবহার বাড়তে পারে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া কৃষিতে সেচ বেশি দিতে হতে পারে আর নানা ধরনের রোগবালাই বেড়ে স্বাস্থ্যঝুঁকি বেশি থাকতে পারে। এসব কিছুর জন্য সংস্থাটি দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোকে প্রস্তুত হতে বলেছে। প্রতিবেদনে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, মিয়ানমার, মালদ্বীপ ও নেপালের শীতের পূর্বাভাস তুলে ধরা হয়েছে।
আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, অন্যান্য বছরে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে দেশের কোথাও না কোথাও শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়ে যায়। এবার এখনো দেশের কোথাও শৈত্যপ্রবাহ নামেনি। অর্থাৎ দেশের কোথাও তিন দিনের বেশি সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে নামেনি। দেশের আর কোথাও না হোক, পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় শৈত্যপ্রবাহের তাপমাত্রা থাকে। এবার তা-ও হয়নি। অবশ্য মাসের শেষের দিকে দেশের কয়েকটি জায়গায় মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক প্রথম আলোকে বলেন, আগামী দু-তিন দিন দেশের বেশির ভাগ এলাকার তাপমাত্রা কিছুটা বাড়তে পারে। তারপর দুই দিন তাপমাত্রা স্থিতিশীল থাকতে পারে। তারপর তাপমাত্রা কিছুটা কমে তা আবারও বাড়তির দিকে যেতে পারে। মাসের শেষ সময় ছাড়া দেশের কোথাও শৈত্যপ্রবাহের আশঙ্কা নেই।
গত সপ্তাহের প্রায় পুরো সময় দেশের বেশির ভাগ এলাকাজুড়ে ঘন কুয়াশা ছিল। গতকাল শুক্রবার ওই কুয়াশাও বিদায় নিতে শুরু করেছে। গত সপ্তাহের শেষে ঘূর্ণিঝড় ভারতের অন্ধ্র উপকূলে আঘাত হানলেও এর সঙ্গে আসা বিপুল জলীয় বাষ্প বাংলাদেশেও প্রবেশ করে। সেগুলো কুয়াশা আকারে এক সপ্তাহ ধরে সারা দেশে অবস্থান করেছিল। কিন্তু দুই দিন ধরে রোদ বেড়ে গিয়ে কুয়াশা কমে আসে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, গতকাল দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
মন্তব্য করুন: