সোমবার, ৭ই অক্টোবর ২০২৪, ২২শে আশ্বিন ১৪৩১ | ই-পেপার
ব্রেকিং নিউজ:
  • সারাদেশে জেলা ও উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আগ্রহী হলে আপনার সিভি ই-মেইল করতে পারেন। ই-মেইল daajkaal@gmail.com
সংবাদ শিরোনাম:
  • সেপ্টেম্বরে সড়কে প্রাণ গেল ৪২৬ জনের
  • পূর্বাঞ্চলে বন্যায় ১৪ হাজার ৪২১ কোটি টাকার ক্ষতি: সিপিডি
  • অভিন্ন জলরাশি নীতিমালা না হলে বন্যাঝুঁকি আরও বাড়বে: রিজওয়ানা
  • ব্যাংক নোটে নতুন নকশা, বাদ যেতে পারে বঙ্গবন্ধুর ছবি
  • মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য মাল্টিপল ভিসা দেওয়ার আহ্বান ড. ইউনূসের
  • ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরীর মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতির শোক
  • সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল হবে: আসিফ নজরুল
  • বৈরী আবহাওয়া, উপকূলীয় অঞ্চলে নৌযান চলাচল বন্ধ
  • শহীদ পরিবারের পক্ষে আজ মামলা করবে নাগরিক কমিটি
  • ৪ বন্দরে ৩ নম্বর সতর্কসংকেত

পদ্মা সেতু রেল সংযোগের উদ্বোধন মঙ্গলবার

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত:
৯ অক্টোবর ২০২৩, ১৮:৩৮

স্বপ্নের পদ্মা সেতুতে বাস চলাচল করছে এক বছরের বেশি সময় ধরে। এবার খুলছে রেল চলাচলের পথ।

পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের ঢাকা-মাওয়া অংশের ৭৭ কিলোমিটার রেলপথের উদ্বোধন হচ্ছে মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর)।
এ দিন মাওয়া প্রান্ত থেকে ট্রেনে চড়ে ভাঙ্গা স্টেশনে যাবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখান থেকে ভাঙ্গায় আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় বক্তব্য দেবেন তিনি।

রেলের সর্ববৃহৎ এই প্রকল্পের উদ্বোধন উপলক্ষে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত প্রত্যেকটি স্টেশনকে বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী উদ্বোধনী ট্রেনটিও সাজানো হয়েছে রংবেরঙের ফেস্টুন ও ফুল দিয়ে।

২০১৬ সালের ১ জানুয়ারিতে শুরু হওয়া এ প্রকল্পে ব্যয় হচ্ছে ৩৯ হাজার ২৪৬ কোটি টাকা। ঢাকা-ভাঙ্গা অংশ আগামীকাল মঙ্গলবার উদ্বোধন হলেও যশোর পর্যন্ত সম্পূর্ণ পথ চালু হবে ২০২৪ সালের ৩০ জুন।

রেল কর্মকর্তারা বলছেন, শুরুতে কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে তিনটি স্টেশনে—মাওয়া, পদ্মা (জাজিরা) ও শিবচরে ট্রেন থামার ব্যবস্থা থাকছে।

গত ১৫ সেপ্টেম্বর পরীক্ষামূলক ট্রেন পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে চালানো হয়। পরের দিন চালানো হয় মালবাহী ট্রেন। ইতোমধ্যে ১২০ কিলোমিটার গতিতেও এ রুটে ট্রেন চালানো হয়েছে, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে ট্রেনের সর্বোচ্চ গতি।

অনুষ্ঠানের সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়ে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের ব্যবস্থাপক (ঢাকা-ভাঙ্গা) ব্রিগেডিয়ার সাঈদ আহমেদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্বোধন ঘিরে আইন-শৃঙ্খলাসহ যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।

প্রকল্পের অগ্রগতি সম্পর্কে প্রকল্প পরিচালক আফজাল হোসেন বলেন, ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত ১৬৯ কিলোমিটার রেলপথের মধ্যে এখন শুধু ঢাকা-ভাঙ্গা পর্যন্ত উদ্বোধন করা হবে।

ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা অংশের কাজের অগ্রগতি ৯৭ শতাংশ জানিয়ে প্রকল্প পরিচালক বলেন, এখন শুধু কিছু স্টেশন ও সিগন্যালিংয়ের কাজ বাকি আছে।

অন্যদিকে যশোর পর্যন্ত কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে তিনি বলেন, প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি হয়েছে ৮৩ শতাংশ। আগামী বছরের জুনে যশোর পর্যন্ত পুরো রেলপথ খুলে দেওয়া হবে।

যোগাযোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা-যশোর রেলপথ নির্মাণের মাধ্যমে ঢাকার সাথে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলা সরাসরি যুক্ত হবে। এ রেলপথের মাধ্যমে নতুন চারটি জেলা মুন্সীগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুর ও নড়াইলে রেল সংযোগ স্থাপিত হবে।

একইসাথে আন্তঃদেশীয় রেল যোগাযোগে ঘটবে বিপ্লব। ঢাকা থেকে সরাসরি কলকাতা যোগাযোগ নিশ্চিত হবে। আর আখাউড়া আগরতলা রেলপথের মাধ্যমে ভারতের দুই নগরী কলকাতা ও আগারতলার দূরত্ব কমে আসবে মাত্র ৫৫০ কিলোমিটারে।

ট্রেনের ভাড়া প্রস্তাবনা
আন্তঃনগর ট্রেনের নন-এসি ভাড়া প্রস্তাব করা হয়েছে ৩৫০ টাকা। এসি চেয়ারে ভাড়া প্রস্তাব করা হয়েছে ৬৬৭ টাকা। বাসের চেয়ে এই পথে ট্রেনের যাত্রীদের বাড়তি ভাড়া দিতে হবে ১০০ টাকা।

রেল কর্তৃপক্ষ তাদের প্রস্তাবনায় বলছে, ট্রেনের ভাড়া বাড়ার পেছনে প্রধান দুটি বিষয় উঠে এসেছে। একটি পদ্মা সেতু অপরটি গেন্ডারিয়া-কেরানীগঞ্জ পর্যন্ত উড়ালপথ। সেতু ও উড়াল পথের জন্য অতিরিক্ত পথ যোগ করে ভাড়া বেশি ধরা হচ্ছে।

পদ্মা সেতুর প্রতি কিলোমিটারকে ২৫ কিলোমিটার দূরত্ব ধরে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের পদ্মা সেতুকে ১৫৪ কিলোমিটার রেলপথ ধরা হয়েছে। অন্যদিকে গেন্ডারিয়া থেকে কেরানীগঞ্জ পর্যন্ত উড়ালপথের প্রতি কিলোমিটারকে ধরা হয়েছে ৫ কিলোমিটার। প্রায় ২৩ কিলোমিটার উড়ালপথকে ১১৫ কিলোমিটার রেলপথ ধরা হয়েছে।

ভাড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) সরদার সাহাদাত আলী বলেন, পদ্মা সেতু ও কেরানীগঞ্জের উড়ালপথের জন্যে একটু ভাড়া বেশি হবে। তবে যশোর পর্যন্ত পুরো রেলপথ চালু হয়ে গেলে ভাড়া কমে যাবে।

ভাঙ্গা পর্যন্ত যাত্রীদের জন্যে কোনো ছাড় থাকবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখনও ছাড় রাখেনি। তবে রাখার নিয়ম রয়েছে। যাত্রী চাহিদার ওপর ভিত্তি করে ঠিক করা হবে।

তবে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর হোসেন  বলেন, বাসের চেয়ে যেন ট্রেনের ভাড়া বেশি না হয়, সে চিন্তাও আমাদের রয়েছে।

পদ্মা সেতু দিয়ে চলবে যে পাঁচ ট্রেন প্রাথমিকভাবে শুরুতে পদ্মা সেতু দিয়ে পাঁচটি যাত্রীবাহী ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, এই পাঁচটি ট্রেনের মধ্যে খুলনা-ঢাকা রুটের আন্তঃনগর ট্রেন চিত্রা, ঢাকা-বেনাপোল রুটের বেনাপোল এক্সপ্রেস বর্তমান রুট পরিবর্তন করে পদ্মা সেতু ঢাকায় চলাচল করবে।

অন্যদিকে ঢাকা-কলকাতা রুটের আন্তর্জাতিক ট্রেন মৈত্রী এক্সপ্রেসও রুট পরিবর্তন করে পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকায় চলাচল করবে।

প্রস্তাবনায় আরও বলা হয়েছে, রাজশাহী থেকে গোপালগঞ্জ পর্যন্ত চলাচল করা আন্তঃনগর ট্রেন মধুমতি এক্সপ্রেস ট্রেনটিকেও রাজশাহী থেকে ভাঙ্গা হয়ে পদ্মা সেতু দিয়ে ঢাকায় আনার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

খুলনা থেকে গোয়ালন্দ রুটে চলাচলকারী মেইল ট্রেন নকশিকাঁথা এক্সপ্রেসকে ভাঙ্গা হয়ে পদ্মা সেতু দিয়ে ঢাকায় আনার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর