প্রকাশিত:
১ অক্টোবর ২০২৩, ১১:৪৫
বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতের কারণে সারা বছরই পর্যটকদের ভিড় লেগে থাকে কক্সবাজারে। এরই মাঝে গত ২৭ সেপ্টেম্বর বিশ্ব পর্যটন দিবসের দিন থেকে শুরু হয়েছে সপ্তাহব্যাপী পর্যটন মেলা ও বিচ কার্ণিভাল।
এই কার্নিভাল পর্যটকদের ভ্রমণ বিনোদনে যোগ করেছে নতুন মাত্রা।
মেলা উপলক্ষে সমুদ্র সৈকতে নানা আয়োজনের পাশাপাশি সন্ধ্যায় জমকালো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করছেন পর্যটকরা।
জেলা প্রশাসন আয়োজিত সাত দিনব্যাপী বিচ কার্নিভালের প্রধান স্পন্সর দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপ। ২৭ সেপ্টেম্বর শুরু হওয়া এ মেলা চলবে ৩ অক্টোবর পর্যন্ত।
শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় উৎসব মঞ্চে গান পরিবেশন করেন চট্টগ্রামের আঞ্চলিক গানের জনপ্রিয় শিল্পী প্রেম সুন্দর। এর পরই লালনের গান নিয়ে মঞ্চে আসেন কুষ্টিয়ার লালন একাডেমির শিল্পীরা। স্থানীয়দের পাশাপাশি হাজারো পর্যটক উপভোগ করেন তাদের সংগীত আয়োজন।
চট্টগ্রাম থেকে আসা মনোজ সেন বলেন, অসাধারণ মুহূর্ত পার করছি। লালনের গান আমার ভীষণ প্রিয়। বন্ধুদের সঙ্গে এসেছি। সমুদ্রের চরে বসে কনসার্ট সত্যিই দারুণ লাগছে।
একই দলের শশাংক সরকার বললেন, গণমাধ্যমে মেলার সংবাদ দেখে আমরা ভ্রমণের পরিকল্পনা করেছি। ছাড়ের বিষয়টি শুনে বেশ খুশি হয়েছিলাম। কিন্তু কোনটাতেই ছাড় পাইনি। তবুও দুঃখ নেই, লালনের দেশের শিল্পীদের গান শুনেই আমরা মুগ্ধ।
বেবী রহমান এসেছেন ঢাকা থেকে। তার ভাষ্য, সবখানেই উৎসব মুখর পরিবেশ আর সাজ সাজ রব। মেলা সত্যিই এবারের ভ্রমণে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
তিনি বলেন, দুই দিনের জন্য এসেছি। কাল চলে যাব। কিন্তু এত আয়োজন দেখে আমার মেয়ে কিছুতেই যেতে চাইছে না।
বিশ্ব পর্যটন দিবস উপলক্ষে ‘পর্যটনে পরিবেশবান্ধব বিনিয়োগ’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে গত ২৭ সেপ্টেম্বর বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতের লাবনী পয়েন্টে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন আয়োজন করে সাত দিনব্যাপী পর্যটন মেলা ও বিচ কার্নিভাল।
মেলার চতুর্থ দিন শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সৈকতের লাবনী পয়েন্টে অনুষ্ঠিত হয়েছে সার্ফিং ও লাইফগার্ড রেসকিউ প্রদর্শনী এবং বিচ ম্যারাথন প্রতিযোগিতা। রাতে ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও ডিজে শো।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (পর্যটন সেল) সৈয়দজাদী মাহবুবা মঞ্জুর মৌনা বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তার বিষয়টি আমাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন সময়ে সৈকতে গোসলে নেমে প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। আজকের লাইফগার্ড রেসকিউ প্রদর্শনীর মাধ্যমে এ বিষয়ে আমরা পর্যটকদের সচেতন করার চেষ্টা করেছি।
জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, সাতদিনের মেলায় রয়েছে সমুদ্রের উন্মুক্ত মঞ্চে সার্কাস প্রদর্শনী, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আতশবাজি, রোড শো, ম্যাজিক শো, ফায়ার স্পিন, লাইফ গার্ড রেসকিউ প্রদর্শনী, ফানুস উৎসব, সার্ফিং প্রদর্শনী, বিচ ম্যারাথন, বিচ ভলিবলসহ নানা আয়োজন।
সিলেট ও সুনামগঞ্জ থেকে আসা শিল্পীরা পরিবেশন করবেন হাসন রাজার গানসহ আঞ্চলিক ভাষায় নানা গান। ময়মনসিংহ থেকে মহুয়াপালা, কুড়িগ্রাম থেকে ভাওইয়া গানের শিল্পীরাও আসবেন। বান্দরবান এবং খাগড়াছড়ি থেকে আসবেন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর দল। চট্টগ্রাম থেকে আঞ্চলিক গানের খ্যাতিমান শিল্পী প্রেম সুন্দর ছাড়াও আসবেন জাতীয় পর্যায়ের শিল্পীরা। একেক দিন মঞ্চে গাইবেন লিজা, ঐশী, তানজির তুহিন, রবি চৌধুরী, নিশিতা বড়ুয়াসহ আরও অনেক জাতীয় শিল্পী।
জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান বলেন, কক্সবাজারের পর্যটন শিল্পের প্রসারে এ উৎসবের আয়োজন। আমাদের প্রত্যাশা, উৎসবের বৈচিত্র্যপূর্ণ নানা আয়োজন কক্সবাজারকে বিশ্বব্যাপী পরিচিত করে তুলবে।
মন্তব্য করুন: