সোমবার, ৭ই অক্টোবর ২০২৪, ২২শে আশ্বিন ১৪৩১ | ই-পেপার
ব্রেকিং নিউজ:
  • সারাদেশে জেলা ও উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আগ্রহী হলে আপনার সিভি ই-মেইল করতে পারেন। ই-মেইল daajkaal@gmail.com
সংবাদ শিরোনাম:
  • সেপ্টেম্বরে সড়কে প্রাণ গেল ৪২৬ জনের
  • পূর্বাঞ্চলে বন্যায় ১৪ হাজার ৪২১ কোটি টাকার ক্ষতি: সিপিডি
  • অভিন্ন জলরাশি নীতিমালা না হলে বন্যাঝুঁকি আরও বাড়বে: রিজওয়ানা
  • ব্যাংক নোটে নতুন নকশা, বাদ যেতে পারে বঙ্গবন্ধুর ছবি
  • মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য মাল্টিপল ভিসা দেওয়ার আহ্বান ড. ইউনূসের
  • ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরীর মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতির শোক
  • সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল হবে: আসিফ নজরুল
  • বৈরী আবহাওয়া, উপকূলীয় অঞ্চলে নৌযান চলাচল বন্ধ
  • শহীদ পরিবারের পক্ষে আজ মামলা করবে নাগরিক কমিটি
  • ৪ বন্দরে ৩ নম্বর সতর্কসংকেত

পদ্মা সেতুর নদীশাসনের ব্যয় বাড়লো ৮৭৭ কোটি

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত:
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৮:৩২

পদ্মা বহুমুখী সেতু চালুর এক বছর পর নদীশাসনের ব্যয় ৮৭৭ কোটি ৫৩ লাখ ৫১ হাজার ৫৫৩ টাকা বাড়িয়েছে সরকার। এতে ভ্যাট ও ট্যাক্সসহ পদ্মা সেতুর নদীশাসনের ব্যয় দাঁড়ালো ৯ হাজার ৫৮৫ কোটি ৩৪ লাখ ৯৩ হাজার টাকা।

সেতু বিভাগরে প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে এ অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।
বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সেতু বিভাগের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি পদ্মা সেতুর নদীশাসনের ব্যয় বৃদ্ধির অনুমোদন দেয়।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ (৩য় সংশোধিত) প্রকল্পের নদী শাসন কাজের ভেরিয়েশন প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ৮৭৭ কোটি ৫৩ লাখ ৫১ হাজার ৫৫৩ টাকা।

পদ্মা সেতুর নদীশাসনে নতুন করে যে ব্যয় বাড়ানো হয়েছে, তার মধ্যে ঠিকাদারের কাজের অতিরিক্ত সময় বাড়ানোয় ২৬০ কোটি ৫৩ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। জাজিরা প্রান্তে কাজ সম্পাদনের সময় ডিজাইন পরিবর্তনজনিত কারণে ও গাইড বাঁধের ৫০ মিটার পর্যন্ত বৃক্ষরোপণে ৫ কোটি ৪৯ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। নৌ-যান চলাচলের সুবিধার্থে নদীর নাব্য বৃদ্ধির জন্য ড্রেজিং কাজের ব্যয় বেড়েছে ৩৯ কোটি ৩০ লাখ টাকা।

মাওয়া প্রান্তে ভরাট, বাউন্ডারি ফেন্সিং, নতুন ল্যাব ইকুইপমেন্ট সংগ্রহ, অতিরিক্ত রাস্তা নির্মাণসহ ফেরিঘাট স্থানান্তর, সফটওয়্যার ও সরঞ্জামসহ নতুন সার্ভে ভেসেল কেনা, উভয় প্রান্তে লোডিং এবং আনলোডিং ইয়ার্ডসহ ওজন সিস্টেম ক্রয়, অপটিক্যাল ফাইবার ইনস্টলেশন, অতিরিক্ত ৩ নম্বর টোল বুথ স্থানসহ কয়েকটি খাতে ৩৫৭ কোটি ৬২ লাখ টাকা ব্যয় বেড়েছে। নদীশাসন কাজের চুক্তি সই হয় ২০১৪ সালের ১০ নভেম্বর এবং কাজ শেষ হয় চলতি বছরের ৬ আগস্ট। এ সময় নির্মাণসামগ্রীর দাম বাড়ার কারণে ৬৩৯ কোটি ৬৩ লাখ টাকা ব্যয় বেড়েছে।

আবার চুক্তির সময়ে মার্কিন ডলারের বিনিময় হার ছিল ৭৮ টাকা ২৫ পয়সা। ডলার বিনিময় হার বাড়ার কারণে ঠিকাদারকে বাড়তি বিনিময় হারে ডলার কিনতে হয়েছে। এ জন্য ব্যয় বেড়েছে ২৬৪ কোটি ২১ লাখ টাকা।

সরকারের ভ্যাট ও আয়কর হার বাড়ানোর কারণেও পদ্মা সেতুর নদীশাসনের ব্যয় বেড়েছে। সরকার বিভিন্ন সময়ে ভ্যাট ও আয়করের হার সাড়ে ১০ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়েছে। এ জন্য ব্যয় বেড়েছে ২৭২ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। এসব ক্ষেত্রে মোট ব্যয় বেড়েছে এক হাজার ৮৩৯ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। তবে নদীশাসনের আওতায় থাকা চারটি খাতে ৯৬২ কোটি ২২ লাখ টাকা খরচ কম হয়েছে। এতে নদীশাসনের প্রকৃত ব্যয় বেড়েছে প্রায় ৮৭৭ কোটি ৫৪ লাখ টাকা।

সেতু বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, পদ্মা সেতুর নদীশাসন কাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চীনের সিনোহাইড্রো করপোরেশনের অনুমোদিত মোট চুক্তি মূল্য ৮ হাজার ৭০৭ কোটি ৮১ লাখ ৪১ হাজার ৪৪৬ টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশি মুদ্রায় ২ হাজার ৫৮৬ কোটি ২২ লাখ ৮ হাজার ৯ টাকা এবং বৈদেশিক মুদ্রায় ৭৮ কোটি ২৩ লাখ ১২ হাজার ২৪৮ মার্কিন ডলার পরিশোধ করতে হবে। এখন সংশোধিত চুক্তিমূল্য বেড়ে ৯ হাজার ৫৮৫ কোটি ৩৪ লাখ ৯৩ হাজার টাকা হলো। এর মধ্যে বাংলাদেশি মুদ্রায় ৪ হাজার ৫০ কোটি ৪১ লাখ ৭১ হাজার ৭৭৭ টাকা পরিশোধ করতে হবে। এতে ৭ কোটি ৪৯ লাখ ৮৫ হাজার ৪৫৯ মার্কিন ডলার সাশ্রয় হবে। নদীশাসন কাজের জন্য ঠিকাদারকে আইপিসি-৯৬ পর্যন্ত বৈদেশিক মুদ্রায় ৫৭ কোটি এক লাখ ৩১ হাজার ৩০৬ মার্কিন ডলার পরিশোধ করা হয়েছে এবং ১৩ কোটি ৭১ লাখ ৯৫ হাজার ৪৮২ মার্কিন ডলার পরিশোধ করতে হবে।

সেতু বিভাগ জানিয়েছে, পদ্মা নদী খরস্রোতা হওয়ায় সম্ভাব্য নদীভাঙনের হাত থেকে অ্যাপ্রোচ সড়কসহ সেতু নির্মাণের পাশাপাশি মাওয়া ও জাজিরার উভয় তীরে নদীশাসনের কাজ একই সঙ্গে হাতে নেওয়া হয়। মাওয়া প্রান্তে ১ দশমিক ৮৩৫ কিলোমিটার এবং জাজিরা প্রান্তে ১১ দশমিক শূন্য ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ নদীশাসনের কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে।

আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন নকশা প্রণয়নকারী প্রতিষ্ঠান ‘ম্যাউনসেল এইসিওএম’ থেকে মূল সেতু, নদীশাসন ও অ্যাপ্রোচ সড়ক কাজের বিস্তারিত ডিজাইন করা হয়েছে। এফআইডিআইসি কন্ট্রাক্ট ডকিউমেন্ট অনুযায়ী, পদ্মা সেতু সংলগ্ন নদীশাসন কাজের উদ্দেশ্যে চূড়ান্ত দরপত্র গ্রহণ করা হয় ২০১৪ সালের ১৯ জুন। দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সুপারিশে ওই বছরের ১০ সেপ্টেম্বর সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ প্রকল্পের নদীশাসন কাজের জন্য চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিনোহাইড্রো করপোরেশনের নিয়োগ সংক্রান্ত প্রস্তাবটি অনুমোদিত হয়।


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর